বিজেপির বিরুদ্ধে মহাজোটের পথে ত্রিপুরা! গদি রক্ষা করতে পারবে বিজেপি? আরও কাছাকাছি তিন শক্তিধর দল!

বিজেপির বিরুদ্ধে মহাজোটের পথে ত্রিপুরা! গদি রক্ষা করতে পারবে বিজেপি? আরও কাছাকাছি তিন শক্তিধর দল!

আগরতলা: লক্ষ্য একটাই, ক্ষমতা থেকে বিজেপিকে সরানো। আর সেই লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গের পথ অনুসরণ করে ত্রিপুরায় মহাজোট হতে চলেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনও ঘোষণা না হলেও বিষয়টি বাস্তবায়িত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে বলেই মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ত্রিপুরায় বিজেপিকে লড়তে হবে বাম-কংগ্রেসের পাশাপাশি তিপ্রা মোথার মহাজোটের সঙ্গে। আর ত্রিপুরার ভোট পরিসংখ্যান বলছে সেটা যদি সত্যি হয় তাহলে বিজেপির পক্ষে অঙ্কটা বেশ কঠিন হয়েই দাঁড়াবে। গত বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় সিপিএমকে সরিয়ে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ বিজেপি ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসার পর রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাস চালিয়েছে। যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কোনওটাই তারা রাখতে পারেনি।

শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চাকরি সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। গত কয়েক মাসে বিজেপির একাধিক বিধায়ক দল ছেড়েছেন। এই অবস্থায় বিজেপিকে ত্রিপুরা থেকে সরাতে উঠে পড়ে লেগেছে বিরোধীরা। তাই বিজেপির বিরুদ্ধে ত্রিপুরায় মহাজোট হতে পারে এমন জল্পনা তৈরি হয়েছে। সেক্ষেত্রে সিপিএম তথা বামেদের সঙ্গে জোট করবে কংগ্রেস। ঠিক যেমনটা হয়েছিল বাংলায়।

ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সিপিএমের পলিটব্যুরোয় আলোচনা হয়েছে বলে খবর।তবে জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে কলকাতায় হবে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। ত্রিপুরায় বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হবে কিনা সেটা সেই বৈঠকেই চূড়ান্ত হবে। আর সেই জোটে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে তিপ্রা মোথার। এ বিষয়ে ত্রিপুরা মোথার প্রধান প্রদ্যোৎ কিশোর মানিক্য দেববর্মনের সঙ্গে কথা বলেছেন  ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী। বর্তমানে চিকিৎসার কারণে ত্রিপুরার বাইরে রয়েছেন প্রদ্যোৎ। তাই তিনি আগরতলায় ফিরলে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

 
কী কারণে মহাজোটের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে ত্রিপুরায়? সম্প্রতি সিপিএম, কংগ্রেস-সহ একাধিক দল ত্রিপুরায় বিজেপিকে হারানোর ডাক দিয়েছে যৌথ বিবৃতিতে সই করে। সেই আবেদনকে সমর্থন জানিয়েছে প্রদ্যোৎ কিশোর মানিক্যর দল তিপ্রা মোথাও। স্বাভাবিকভাবেই মহাজোটের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে তখন থেকেই। এ বিষয়ে ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক যা বলেছেন তাতে মহাজোট হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তাঁর কথা অনুযায়ী মহাজোটের পথ দিন দিন মসৃণ হচ্ছে।

গত বছর ত্রিপুরায় চারটি বিধানসভার উপনির্বাচন হয়।  তাতে তিনটিতে জয় পেয়েছে বিজেপি। তবে আগরতলা কেন্দ্রটিতে কংগ্রেসের সুদীপ রায় বর্মন জয়ী হয়েছেন। কংগ্রেসের দাবি তাদের প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন দেখা যাচ্ছে ত্রিপুরা জুড়ে। অন্যদিকে সিপিএম আগের চেয়ে শক্তি বাড়িয়েছে। সেই নির্বাচনের ফলাফল বলছে মহাজোট হলে বাকি তিনটি আসনেও বিজেপি লড়াই অনেক কঠিন হয়ে পড়ত। তাই এটা স্পষ্ট বিজেপি বিরোধী মহাজোট হলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

ত্রিপুরার জনজাতি এলাকায় সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে। ত্রিপুরার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বলছে সেখানকার ১৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে জনজাতি সম্প্রদায়ের ভোট ফলাফল নিমেষে বদলে দিতে পারে। ত্রিপুরায় স্থানীয় স্বশাসিত পরিষদের নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছে তিপ্রা মোথা। তাই ওই ১৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে মহাজোট হলে বিজেপির জেতা কঠিন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।  কারণ ত্রিপুরার বহু বিধানসভা কেন্দ্রে সামান্য ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়। এই পরিস্থিতিতে ত্রিপুরা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে গেরুয়া শিবির। সমস্যা আগেই তৈরি হওয়ায় তারা মুখ্যমন্ত্রী বদল করতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু তাতেও সমস্যা পুরো মেটেনি। দলে গোষ্ঠীকোন্দল চরম আকার নিয়েছে। তাই ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে বড় কোনও চমক দেখা যায় কিনা এখন তারই অপেক্ষা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − sixteen =