রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর পূর্ণ, যুদ্ধ থামার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না! নতুন করে অস্ত্র সম্ভার বাড়াচ্ছে রাশিয়া

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর পূর্ণ, যুদ্ধ থামার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না! নতুন করে অস্ত্র সম্ভার বাড়াচ্ছে রাশিয়া

 

নিজস্ব প্রতিনিধি:  ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ সিনেমায় যুদ্ধের বিরুদ্ধে যে বার্তা দেওয়া হয়েছিল তা চিরকালের জন্য প্রাসঙ্গিক হয়ে থাকবে। সেখানে গুপী গাইছেন, ‘তোরা যুদ্ধ করে করবি কি তা বল’?রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর পূর্ণ হল শুক্রবার। ঠিক তখনই এই গানের লাইন নতুন করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল। রাশিয়ার সাধারণ মানুষ যুদ্ধের বিরুদ্ধে রয়েছেন। এমনকী যুদ্ধ শুরুর পরে বিষয়টি নিয়ে মস্কোর রাস্তায় নেমে তাঁরা বিক্ষোভ পর্যন্ত দেখিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে যুদ্ধ থামেনি। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধের বর্ষপূর্তির আগের দিন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের  ঘোষণায় প্রমাদ গুণছে গোটা বিশ্ব।

বৃহস্পতিবার পরমাণু অস্ত্রসম্ভার বাড়ানোর হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন। এদিন মস্কোয় একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে তিনি জানান, পারমাণু অস্ত্রসম্ভার বাড়ানোর লক্ষ্যে আরও ব্যয়বরাদ্দ করতে চলেছে তাঁর প্রশাসন। এর আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইউক্রেন সফরের পরই সে দেশের সঙ্গে নিরস্ত্রীকরণ সম্পর্কিত ‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার কথা ঘোষণা করেন পুতিন। যে ঘটনায় ক্ষুব্ধ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এবার পরমাণু অস্ত্র বাড়ানো সম্পর্কিত যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুতিন তাতে উদ্বেগ বাড়ল অন্তর্জাতিক মহলের। ওই কর্মসূচিতে হাজির হয়ে পুতিন বলেন, “ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন আরও বাড়ানো হবে। সমুদ্রের ভিতর দিয়ে যেতে পারে এমন ক্ষেপণাস্ত্র যাতে রুশ সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া যায় সেই পরিকল্পনা চলছে।” এর পাশাপাশি চিনের প্রথম সারির কূটনীতিবিদ ওয়াং ই-র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন পুতিন। এ বিষয়ে পুতিন জানান, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আসন্ন মস্কো সফরের জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। সূত্রের খবর, মার্চ কিংবা এপ্রিল মাসে রাশিয়া সফরে যেতে পারেন চিনের প্রেসিডেন্ট। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টিকে ভাল চোখে দেখছে না ওয়াশিংটন। সেই সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘ন্যাটো’র আশঙ্কা, যুদ্ধে রাশিয়াকে অস্ত্র-সহ অন্যান্য রসদ দিয়ে সাহায্য করতে পারে চিন। এখানেই শেষ নয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় পরীক্ষামূলক ভাবে যৌথ মহড়ায় নামতে চলেছে রাশিয়া এবং চিন। সেই মহড়ায় অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলির ব্যবহার করবে মস্কো। রুশ ‘আগ্রাসনে’র নিন্দা করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্তোনিয়ো গুতেরেজ়। রাশিয়ার ‘শুভবুদ্ধি’র উদয় হোক, এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

তাই সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, এভাবেই কি যুদ্ধ চলবে আর হাজার হাজার মানুষ লাগাতার প্রাণ হারাবেন? ইতিমধ্যেই রাশিয়া এবং ইউক্রেন দু’পক্ষেরই হাজার হাজার সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ যুদ্ধ থামানোর বার্তা ধারাবাহিকভাবে দিয়ে আসছে। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে গোটা পৃথিবীর অবস্থা কি হয়েছিল তা ইতিহাস ঘাঁটলেই জানা যায়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিণতি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো হবে না তো? এই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই যুদ্ধের বর্ষপূর্তিতে প্রত্যেকে চাইছেন অবিলম্বে থেমে যাক এই যুদ্ধ। শান্তি বিরাজ করুক দুটি দেশেই। আর সেই শুভক্ষণের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে আন্তর্জাতিক মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 1 =