কলকাতা: নতুন দায়িত্ব পেলেন তৃণমূল সাংসদ তথা টলিউডের সুপারস্টার দেব। তাঁকে রাজ্য সরকার পর্যটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করেছে। অর্থাৎ বাংলার পর্যটনকে দেশের কাছে আরও ছড়িয়ে দিতে দেবকে ব্যবহার করতে চায় রাজ্য।
ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সম্মতি দিয়েছেন অভিনেতা। পরপর দুটি লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল কেন্দ্র থেকে বড় ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন দেব। তবে শোনা যায় ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে যখন তাঁকে প্রথম বার তৃণমূলের টিকিটে দাঁড় করানো হয়েছিল তখন দেব নিমরাজি ছিলেন। অনেক বুঝিয়ে তাঁকে রাজি করানো হয়। গত লোকসভা নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন। এবার তাঁকে আরও একটি নতুন দায়িত্বে দেখা যাবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে তবে কি আগামী দিনে সরাসরি রাজনীতির পাট চুকিয়ে ফেলবেন অভিনেতা? তিনি কি আগামী লোকসভা নির্বাচনে আর প্রার্থী হতে চাইছেন না? অভিনয়ের পাশাপাশি শুধুমাত্র বাংলার পর্যটন প্রসারের কাজেই তাঁকে দেখা যাবে? এই জল্পনা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
বিতর্কের শুরু ‘প্রজাপতি’ সিনেমা দিয়ে। ছবিটিতে দেবের সঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বিজেপি নেতা ‘মহাগুরু’ মিঠুন চক্রবর্তী। সেই ছবিতে মিঠুনকে কেন নেওয়া হয়েছিল বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
কুণাল এটাও বলেছিলেন যে, সেই ছবিতে মিঠুনের পরিবর্তে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিলে আরও ভালো হতো। গোটা বিষয়টি নিয়ে রাজ্য জুড়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। এরপরই আসরে নামেন স্বয়ং অভিনেতা দেব। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন মিঠুন চক্রবর্তীকে ছাড়া অন্য কাউকে নেওয়ার কথা ভাবাই যায় না। এই ইস্যুতে তখন রুচিসম্মত ভাষায় কুণালের তোলা প্রশ্নের জবাব দিতে দেখা যায় দেবকে। দলের সঙ্গে তরজায় না জড়িয়েও দেব বুঝিয়ে দেন অভিনয় জগতের ক্ষেত্রে তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মতামত শুনতে রাজি নন। বলাবাহুল্য গোটা বিষয়টি নিয়ে দলের সঙ্গে অলিখিতভাবে একটা যেন দূরত্ব তৈরি হয়ে যায় দেবের। আর সেই ঘটনার মাস দু’য়েক পরেই দেখা যাচ্ছে দেব বাংলার পর্যটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হলেন।
তাই অনেকেই বিষয়টিকে দু’য়ে দু’য়ে চার করতে চাইছেন। তৃণমূলের টিকিটে দু’বার সাংসদ হওয়ার পরেও কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া রাজনৈতিক বক্তব্য রাখতে দেখা যায় না দেবকে। এমনকী বিজেপি বিধায়ক তথা অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায় একটি বিষয়ে দেবকে নজিরবিহীন ভাষায় আক্রমণ করলেও তার পাল্টা দেবকে কিছু বলতে শোনা যায়নি। অর্থাৎ তিনি টলিউডের সহকর্মীর সঙ্গে বিতর্ক বাড়াতে চাননি। রাজনৈতিক মহল দেবের এই ভূমিকাকে প্রশংসায় ভরিয়েছে।
নিজের কেন্দ্রে বেশি সময় দিতে পারেন না দেব। তা সত্ত্বেও ঘাটালের উন্নয়নে সাধ্যমত চেষ্টা তিনি করে গিয়েছেন বলেই খবর। কিন্তু সূত্রের খবর, আগামী লোকসভা নির্বাচনে দাঁড়ানোর ব্যাপারে এখনও মনস্থির করতে পারেননি দেব। যদিও এ বিষয়টি নিয়ে কোনও দিনই তাঁকে কিছু বলতে শোনা যায়নি। তৃণমূলও এ ব্যাপারে মুখ খোলেনি। এই পরিস্থিতিতে দেবকে যেভাবে নতুন দায়িত্ব দিল রাজ্য যাতে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে। তাই আগামী দিনে দেবের রাজনৈতিক গতিপথে নতুন কোনও বাঁক আসে কিনা এখন সেটাই দেখার।