‘নিষ্ক্রিয়’ সদস্যদের বার্তা দিতে মুখ খুললেন বিমান! একটু দেরি হল কি

দলে 'অনুপ্রবেশ' হচ্ছে, 'চর' পাঠানো হয়েছে! এমনও দাবি করতে শোনা গেল বিমান বসুকে

কলকাতা: বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে ধরাশায়ী হয়েছে সিপিএম। জোট করেও সাফল্য তো মেলেনি উল্টে আসন সংখ্যা হয়ে গিয়েছে শূন্য। রাজনৈতিক ময়দানে থেকে যেন কার্যত মুছে গিয়েছে লাল বাহিনী। কিন্তু দমে যাওয়ার পাত্র নন দলের শীর্ষ নেতারা। বিভিন্ন ইস্যুতে শাসক দল থেকে শুরু করে বিরোধী দল বিজেপিকে নিশানা করছে সিপিএম। আর ঠিক এমন পরিস্থিতিতে দলের নিষ্ক্রিয় সদস্যদের কড়া বার্তা দিলেন সিপিএম নেতা বিমান বসু। তবে এখানেও একটা প্রশ্ন উঠছে, একটু বেশি দেরি হয়ে গেল কি?

সিপিএমের সাপ্তাহিক মুখপত্রের শারদ সংখ্যা দলের নিষ্ক্রিয় সদস্যদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। সেখানে তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করে দিয়েছেন যে, সকলকে ময়দানে নেমে আন্দোলনে শামিল হতে হবে, শুধুমাত্র অনুদান দিয়ে দায়সারা হলে চলবে না। একই সঙ্গে তিনি বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে বলেন, দলে চরবৃত্তি হচ্ছে! অনুপ্রবেশ ঘটেছে সিপিএম পার্টিতে। বিমানের বক্তব্য, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দলীয় কর্মীরা যদি দলের সদস্যদের নিষ্ক্রিয় অবস্থায় দেখেন তাহলে তাদের মনোবলে আঘাত হবে। একই সঙ্গে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে সকলের কাছে। এই কারণেই শুধুমাত্র অনুদান দিয়ে কাজ সেরে ফেলার ভাবনা বাতিল করতে হবে এবং দলের হয়ে সক্রিয় হতে হবে বলে বার্তা দিয়েছেন তিনি। বিমানের স্পষ্ট কথা, যারা রাজনৈতিক সংগঠনের কাজ করতে সক্ষম কিন্তু শুধুমাত্র সদস্যপদ রক্ষা করতে রয়ে গেছেন তাদের দলে রাখার অর্থ নেই। এই প্রেক্ষিতে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে বিমান বসু বুঝিয়ে দিয়েছেন যে ভবিষ্যতে এই ধরনের সদস্যরা হয়তো দল থেকে বহিষ্কৃত হতে পারেন। এমনকি তার এও যুক্তি, এই সমস্ত নিষ্ক্রিয় সদস্যদের দেখে দলের তরুণ সদস্যরা মনোবল হারাচ্ছেন তাই এই জিনিস বেশি দিন চলতে দেওয়া যাবে না।

বিমান আরও দাবি করে বলেছেন, তিনি মনে করছেন সিপিএমে অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকেছে। আদতে এরাই হচ্ছে দলের নিষ্ক্রিয় সদস্য। তাই এদের চিহ্নিত করা খুবই জরুরী না হলে আগামী দিনে দলের আরও বেশি সমস্যা বাড়বে। বিমান বসুর বক্তব্য কার্যত একদম স্পষ্ট। তিনি দলীয় সংগঠন মজবুত করার জন্য বার্তা দিচ্ছেন এবং একইসঙ্গে দলের তরুণ সদস্যদের মনোবল বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন। কিন্তু ঠিক এই জিনিসটাই যদি আরো কয়েক মাস আগে হতো তাহলে কি বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের ফলাফল পরিবর্তিত হত? বিমান বসুর মতো শীর্ষ নেতারা যদি আগে থেকে দলীয় সংগঠনে জোর দেওয়ার কথা ভাবতেন তাহলে কি আসন সংখ্যা শূন্য হত? জোটের ক্ষেত্রেও যদি এইভাবে পরামর্শ এবং বার্তা দেওয়া হত দলের অন্দরে তাহলে কি সিদ্ধান্ত অন্যরকম হতে পারত? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর হয়তো শুধু লাল বাহিনীর অন্দর থেকেই মিলতে পারে।

​​​​​

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − 5 =