নয়াদিল্লি: তবে কি এবার ছবিটা বদলাতে শুরু করল? বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের দিল্লি সফর নিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা তুঙ্গে। হঠাৎই দিল্লিতে গিয়ে বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা বর্তমান উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আনন্দ বোস। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি খবরের শিরোনামে এসেছে। এর আগে তৃণমূলের দৃষ্টিকোণ থেকে সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু হঠাৎই যেন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আসলে নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের সম্পর্কে নতুন বাঁক দেখা যাচ্ছে বলে অনেকেরই ধারণা। তবে কি আগামী দিনে ‘দ্বিতীয় ধনকড়’ হিসেবে দেখা যাবে বাংলার নতুন রাজ্যপালকে? দেখা যাবে অ্যাকশন রিপ্লে? এই চর্চা স্বাভাবিকভাবেই শুরু হয়েছে রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে।
বঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে কিছুদিন আগেই বৈঠক করেছেন রাজ্যপাল। বৈঠকের পরই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন ও আইনশৃঙ্খলা জনিত বিষয় নিয়ে রাজভবন রীতিমতো কড়া বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে রাজ্যে হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। সেই ‘উপযুক্ত পদক্ষেপ’ শব্দবন্ধ তৃণমূলকে যে অস্বস্তিতে ফেলেছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়া হিংসা মুক্ত পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার উপরেও জোর দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এরপর থেকেই নবান্ন ও রাজভবনের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ রাজ্যপাল হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে পা রাখার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন সিভি আনন্দ বোস। তবে কি সেই তাল কাটতে শুরু করেছে? এই প্রশ্ন অবধারিতভাবে উঠছে।
তাল যে কাটছে সেই ইঙ্গিত কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে। সুকান্তের সঙ্গে বৈঠকের পর রাজভবন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হলে তাতে পদক্ষেপ করা হবে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে বিরোধীরা। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন করে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে হবে, এই দাবি বহু আগেই করেছে বিজেপি। যথারীতি তৃণমূল তার বিরোধিতা করেছে। তাই রাজভবন যেভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কিত বিবৃতি দিয়েছে তাতে নতুন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়টি সামনে আসবে বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করছে। এই আবহের মধ্যেই দিল্লি গিয়েছেন রাজ্যপাল।
বৈঠক করেছেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে। যদিও তৃণমূল এখনও পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে তাদের বক্তব্য জানায়নি। তবে তারা যে গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রেখে চলছে তা স্পষ্ট। গত কয়েক মাসে নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের যে সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে তা রাতারাতি সংঘাতে পরিণত হোক এটা নিশ্চিতভাবে চাইছে না তৃণমূল। তাই গোটা পরিস্থিতি দেখে সাবধানে পা ফেলতে চাইছে শাসক দল। এই অবস্থায় রাজ্যপাল কলকাতায় ফিরে আসার পর তাঁকে কি ভূমিকায় দেখা যায় সেদিকেই চোখ থাকবে রাজনীতির কারবারিদের।