কুন্তল-শান্তনুর সম্পত্তি দেখলে চক্ষু চড়কগাছ হতে বাধ্য! এরকম বহু শান্তনু-কুন্তল লুকিয়ে নেই তো?

কুন্তল-শান্তনুর সম্পত্তি দেখলে চক্ষু চড়কগাছ হতে বাধ্য! এরকম বহু শান্তনু-কুন্তল লুকিয়ে নেই তো?

নিজস্ব প্রতিনিধি:  শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষ এবং শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তাঁদের সম্পত্তির তালিকা সামনে আসতে শুরু করেছে। ঠিক তখনই তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। যে সম্পত্তির খতিয়ান সামনে আসছে তা দেখে হতবাক সবাই। পঞ্চাশ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করা শান্তনু কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি কীভাবে বানালেন সেটা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। বাগানবাড়ি, রিসর্ট, ধাবা, একাধিক বিশাল ফ্ল্যাট, বিলাসবহুল গাড়ি, সেই সঙ্গে প্রচুর নগদ টাকা। একই ভাবে কুন্তল ঘোষেরও বহু সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ গ্রেফতার না হলে এভাবেই বিলাসবহুল জীবনযাত্রা চালিয়ে যেতেন তাঁরা। 

সুদীর্ঘ বাম আমলে কোনও দিন এভাবে চাকরি বিক্রি করার অভিযোগ ওঠেনি। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর প্রথম কয়েকটা বছর সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ পেতে গেলে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠতে থাকে একশ্রেণির তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। সেই শুরু, এরপর যতদিন গিয়েছে ততই এই অভিযোগের মাত্রা আরও বেড়েছে। পরবর্তীকালে দেখা গিয়েছে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নিতে গেলেও কাটমানি দিতে হচ্ছে। তখন থেকেই বিরোধীরা অভিযোগ করতে শুরু করে তৃণমূলের রন্ধ্রে রন্ধে দুর্নীতি ঢুকে গিয়েছে। ঠিক এরপরই সামনে আসে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির পাশাপাশি কয়লা পাচার, গরু পাচার কাণ্ড। একে একে গ্রেফতার হন তৃণমূলের নীচু এবং উপর তলার একাধিক নেতা। তাই প্রশ্ন এরকম বহু শান্তনু-কুন্তল বাংলার আনাচে-কানাচে রয়ে যায়নি তো? তাঁরা কী আত্মগোপন করে রয়েছেন? নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের শিকড় আরও কতদূর গিয়েছে এই ধরনের যুব নেতাদের মাধ্যমে, তার উত্তর খুজছেন সবাই। 

সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার এক বছর পরে হবে লোকসভা ভোট। তৃণমূল ভাল করেই জানে এই ধরনের নেতাদের জন্যই দলের নাম খারাপ হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এতদিন এই ধরনের নেতারা বিপুল সম্পত্তি করলেন, আর সেটা দেখেও কেন না দেখার ভান করলেন জেলার অন্যান্য নেতৃত্ব? তবে কি তাঁরাও এই দুর্নীতির টাকার ভাগ পেতেন? নাকি ভয়ের কারণে কিছু বলতে পারেননি? এই চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য জুড়ে। তাই রাজ্য জুড়ে শান্তনু-কুন্তলদের মতো আরও নেতা যদি লুকিয়ে থাকেন, তবে তাঁদের খুঁজে বের করার কাজ শাসক দলকেই করতে হবে। না হলে তার ফল কিন্তু অবশ্যই পড়বে ভোট বাক্সে। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার দুর্নীতির ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা বলেছেন। এবার তার বাস্তব প্রয়োগ দেখতে চান বাংলার মানুষ। দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে তৃণমূল কতটা কড়া ব্যবস্থা নেয়, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten − four =