কার্যত চুপচাপ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু (Shubhendu Adhikari)
লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরই কার্যত চুপচাপ হয়ে গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বাংলায় গতবারের ফল ধরে রাখা তো দূরের কথা, তার থেকে ছ’টি আসন কমে গিয়েছে বিজেপির। এ ব্যাপারে ঠারেঠোরে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের বড় অংশ শুভেন্দুকেই দায়ী করছেন। কারণ গোটা নির্বাচনী পর্বে শুভেন্দুর মতামতকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
অ্যাংরি ইমেজ হঠাৎই উধাও
এরপর দেখা যাচ্ছে শুভেন্দুর সেই অ্যাংরি ইমেজ হঠাৎই উধাও হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের বিরোধিতা করছেন, সাংবাদিক সম্মেলনও করছেন, তবে সেই চেনা অ্যাগ্রেসিভ মুডের শুভেন্দুকে দেখা যাচ্ছে না। তাই আগের মতোই স্বমহিমায় রাজ্য রাজনীতির ময়দানে তাঁকে ফের কবে থেকে দেখা যাবে তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
শুভেন্দু কাঁধে পাহাড় প্রমাণ চাপ
আসলে নিজের অজান্তেই এক পাহাড় প্রমাণ চাপ কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন শুভেন্দু। লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে এবার যাঁরা বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন তাঁদের বড় অংশের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে সুপারিশ ছিল শুভেন্দু অধিকারীর, এমনটাই খবর। এবার প্রার্থীদের বড় অংশকে শুভেন্দুর আবেদনের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত করেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, বিজেপি সূত্রে এ তথ্য জানা গিয়েছে।
ক্ষুব্ধ দিলীপ
রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা দলের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ দিলীপ ঘোষের কেন্দ্র বদলের ক্ষেত্রেও শুভেন্দুর হাত ছিল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দিলীপবলে বিজেপির অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায়। মেদিনীপুর ছেড়ে নতুন কেন্দ্র বর্ধমান-দুর্গাপুরে গিয়ে পরাজিত হয়েছেন দিলীপ। এরপর প্রকাশ্যেই কারও নাম না করে।
শুভেন্দুর তৎপরতায় লোকসভায় টিকিট!
বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে রেখা পাত্রের মতো এক গ্রামবাসীকে প্রার্থী করার পিছনেও শুভেন্দুর তৎপরতা ছিল। এর পাশাপাশি তমলুকে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, কৃষ্ণনগরে ‘রাজমাতা’ অমৃতা রায়, মেদিনীপুর কেন্দ্রে অগ্নিমিত্রা পাল, ব্যারাকপুরে অর্জুন সিং, ঘাটালে অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেককেই লোকসভায় প্রার্থী করা হয়েছে শুভেন্দুর তৎপরতায়।
পরাজিত হওয়ায় দায় শুভেন্দুর কাঁধে
সূত্রের খবর, অর্জুন সিংকে নাকি দলে নিতেই কিঞ্চিত আপত্তি তুলেছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। কিন্তু শুভেন্দুর জেদের কাছে হার মানতে হয়েছিল সুকান্ত তথা অন্যান্য নেতৃত্বকে। সেই জায়গায় দেখা যাচ্ছে পরাজিত হয়েছেন অর্জুন সিং, অমৃতা রায়, হিরণ চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল, তাপস রায়, রেখা পাত্র-সহ অনেকেই। তাঁরা পরাজিত হওয়ায় সেই দায়ভার কার্যত এসে পড়েছে শুভেন্দুর কাঁধে। ঘটনা হল শুভেন্দু ভাল করেই জানতেন ফলাফল খারাপ হলে তার সিংহভাগ দায় তাঁকেই নিতে হবে।
যা ভেবেছিলেন শুভেন্দু তার কিছুই হয়নি
এরপরেও সেই চাপ নিয়েছিলেন তিনি। সেই সূত্রে এটাও ঠিক যে, বাংলায় বিজেপির ফল গতবারের থেকে ভাল হলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে আরও কাছের মানুষ হয়ে উঠতেন শুভেন্দু। কিন্তু যা ভেবেছিলেন শুভেন্দু তার কিছুই হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ফল প্রকাশের পর তিন সপ্তাহ কেটে গেলেও রাজ্য রাজনীতির ময়দানে অ্যাগ্রেসিভ মুডে শুভেন্দুকে দেখা যাচ্ছে না। তাঁর সেই চেনা ছন্দ উধাও।
চেনা মেজাজ উধাও শুভেন্দুর
আগের মতো সেই আক্রমণাত্মক মেজাজে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলকে তোপ দাগতে দেখা যাচ্ছে না তাঁকে। যথারীতি বিষয়টি নিয়ে চর্চা চলছে রাজ্য রাজনীতিতে। তবে শুভেন্দু নিশ্চিত ভাবে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে পুরনো মেজাজে শীঘ্রই ধরা দেবেন বলে অনুগামীরা দাবি করছেন। এই পরিস্থিতিতে কোন ইস্যুতে শুভেন্দুকে সেই চেনা মেজাজে দেখা যায় এখন তারই অপেক্ষা।
আরও পড়ুন-
প্রশ্নফাঁস রুখতে এই রাজ্যের এত বড় পদক্ষেপ! কী আইন আনা হচ্ছে?
অত্যন্ত কৌশলী চাল! কোন কারণে রাহুলকে বিরোধী দলনেতা করল কংগ্রেস
মীনাক্ষীর নেতৃত্বে ভরসা রাখতে পারছে না সিপিএম? উঠছে নানা মত
অধীর-জল্পনা! তিনি কী এবার রাজ্যসভায়?
একটি কেন্দ্রে হার মানতে পারছে না বিজেপি
Politics: Shubhendu Adhikari‘s angry image missing from Bengal politics after election defeat.