পঞ্চায়েতে প্রতিনিধিদের রাজনৈতিক পরিচয় কেন জানতে চাইল রাজ্য? প্রশাসনের অন্দরে কৌতূহল!

পঞ্চায়েতে প্রতিনিধিদের রাজনৈতিক পরিচয় কেন জানতে চাইল রাজ্য? প্রশাসনের অন্দরে কৌতূহল!

ecf192d0b9837609c9fe52626868afb4

কলকাতা:  কয়েক মাসের মধ্যেই হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। বলা যায় গ্রাম বাংলার এই নির্বাচন কার্যত দরজায় কড়া নাড়ছে। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যেই সে ব্যাপারে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জেলা পঞ্চায়েত আধিকারিকদের কাছে পঞ্চায়েতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চেয়েছে রাজ্য সরকার। প্রশাসন সূত্রে এ খবর পাওয়া গিয়েছে। যে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।

 

সূত্রের খবর রীতিমতো রিপোর্ট আকারে এই তথ্য জানতে চেয়েছে রাজ্য। রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েত স্তরে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের রাজনৈতিক পরিচয় সংশ্লিষ্ট দলগুলির কাছে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তাই সেই তথ্য রাজ্য প্রশাসন কেন জানতে চাইছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিশেষজ্ঞ মহল। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে প্রায় ৬৫ হাজার সদস্য রয়েছেন। তাই এই সম্পর্কিত তথ্য রাখার জন্য এবং জনপ্রতিনিধিরা কেমন কাজ করছেন তা জানার স্বার্থেই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

 

রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর কিছুদিন আগেই জেলা পঞ্চায়েত আধিকারিকদের কাছে এই মর্মে বার্তা পাঠিয়েছে যে, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত সেটি জানাতে হবে। ১৪ মার্চ পর্যন্ত তাঁরা কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সেই তথ্যও দিতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন রাজ্য প্রশাসন কেন এমন তথ্য জানতে চাইল? ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে এই মুহূর্তে শাসক দলের হাতে কতগুলি পঞ্চায়েত রয়েছে এভাবেই তা বুঝে নিতে চাইছে রাজ্য। সেই সঙ্গে বিরোধীদের হাতে কোন কোন পঞ্চায়েত রয়েছে, এবং সেখানে কতটা কাজ হয়েছে সেটাও রাজ্য জানতে চায় বলে মনে করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি গত পাঁচ বছরে পঞ্চায়েত স্তরে প্রতিনিধিরা  দলবদল করেছেন কিনা সেটাও বুঝে নিতে চান প্রশাসনিক কর্তারা।  কারণ বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে দলবদল করলেও পঞ্চায়েত সদস্যরা অনেক সময় সংশ্লিষ্ট দফতরে বিষয়টি জানান না। তাই সেই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। তবে বিষয়টিকে ব্যতিক্রমী ঘটনা হিসেবেই দেখছেন রাজনীতির কারবারিরা। তবে কি পঞ্চায়েত নির্বাচনে এবার লড়াই বেশ কঠিন বুঝেই রাজ্য প্রশাসন তৃণমূলের নির্দেশ মেনে এমন পদক্ষেপ করেছে? সেই প্রশ্ন কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

 

আসলে বিগত কয়েক মাস ধরে তৃণমূল নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতিতে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ উঠেছে। তাতে গ্রেফতারও হয়েছেন অনেকে। সাগরদিঘি উপ-নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল। সংখ্যালঘু ভোট পাশ থেকে সরে যেতে শুরু করেছে, এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে শাসক দলে। সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে একেবারেই স্বস্তিতে নেই তৃণমূল। সেই কারণেই রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েতে জনপ্রতিনিধিদের দলগত অবস্থান কি রয়েছে সেটাই বুঝে নিতে চাইছে শাসক দল। আর সেই সূত্রেই রাজ্য প্রশাসনের এই পদক্ষেপ, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *