কলকাতা: হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পাশাপাশি নিম্ন আদালতের একাধিক বিচারক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে সিবিআইয়ের তদন্ত পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেই যাচ্ছেন। কেন এত ধীরগতিতে তদন্ত হচ্ছে সেই প্রশ্ন বারবার তুলছেন তাঁরা। সেই কারণে বাগদার ‘সৎ রঞ্জন’ অর্থাৎ চন্দন মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পরেও আদালতের প্রশ্ন ছিল তাঁকে ধরতে এত সময় লাগল কেন? একই ভাবে তাপস মণ্ডল এবং নীলাদ্রি ঘোষ গ্রেফতার হওয়ার পরেও আদালত সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে খুশি হতে পারেনি। কারণ তাপসের নাম বহুদিন আগেই এফআইআরে ছিল। কিন্তু তাঁকে গ্রেফতার করতে এত সময় লাগল কেন সেই সদুত্তর চায় আদালত। এই পরিস্থিতিতে তাপস, কুন্তল, নীলাদ্রিদের জেরা পর্ব চলছে। সেই সূত্রে উঠে এসেছে নতুন কয়েকটি নাম।
ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন একটার পর একটা নাম উঠে আসছে, কিন্তু রাঘববোয়ালদের কি হবে? বিরোধীদের অভিযোগ যাদের ধরা হচ্ছে তাঁরা নেহাতই চুনোপুঁটি। আসল মাথারা অন্তরালে রয়েছেন বলে বিরোধীদের দাবি। তবে এটাও বলতে হবে যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিনহার মতো হেভিওয়েটদেরও গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে বিরোধীদের ইঙ্গিত সম্পূর্ণ অন্য জায়গায়। তাদের অভিযোগের তির তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্বের দিকে। কিন্তু সেদিকে সিবিআইয়ের হাত যাচ্ছে না বলে অনেকেরই ক্ষোভ রয়েছে। সেই অংশের অভিযোগ তবে কি সিবিআই চুনোপুঁটিদের ধরে রাঘববোয়ালদের ছেড়ে দিতে চাইছে? এই চর্চা এখন রাজ্য জুড়ে চলছে।
কথায় বলে কান টানলে মাথা আসে। সেক্ষেত্রে কান টানা তো ধারাবাহিকভাবে চলছে। কিন্তু মাথা আসছে কোথায়? যাদের ধরা হয়েছে তাঁদের দাবি টাকা নাকি তাঁরা নেননি। কিন্তু সিবিআই নিশ্চিত তাঁরা বিপুল অঙ্কের টাকা তুলে মাথাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। তাই সেই সমস্ত মাথার কাছে কবে পৌঁছবে সিবিআই? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চায় রাজ্যবাসী। এছাড়া সিবিআই কখন কাকে হেফাজতে নিতে চাইছে, বা কখন কাকে জেল হেফাজতে রাখতে চাইছে সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত। আদালতের প্রশ্ন, যদি জেরা পর্ব শেষ হয়ে গিয়েই থাকে তাহলে আবার জেল হেফাজত চাওয়া হচ্ছে কেন? সেক্ষেত্রে সিবিআইয়ের উত্তর তাঁরা জামিন পেলে তদন্ত প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে তাহলে সেই সমস্ত অভিযুক্তদের হেফাজতে রাখছে না কেন সিবিআই? সব মিলিয়ে সকলেই জানতে চান রাঘববোয়ালরা কবে জালে ধরা পড়বেন? আপাতত সেই উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত সবাই। শুধুমাত্র নিচুস্তলার দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা-নেত্রী বা অন্যান্য ব্যক্তিরা নন, মানুষ আরও বড় বড় নাম দেখতে চান। কারণ তাঁরা নিশ্চিত শুধুমাত্র নীচুতলার হাত দিয়ে এত বড় দুর্নীতি ঘটেনি। তাই আগামী দিনে ‘বিগ-শট’রা ধরা পড়েন কিনা সেদিকেই চোখ থাকবে সবার।
