জেরায় নানা নাম উঠে আসছে কুন্তল-তাপসের মুখে, তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে?

জেরায় নানা নাম উঠে আসছে কুন্তল-তাপসের মুখে, তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে?

নিজস্ব প্রতিনিধি: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই বা ইডি যেভাবে তদন্ত চালাচ্ছে তা নিয়ে খুশি নয় আদালত। নিম্ন আদালত বা কলকাতা হাইকোর্ট, একাধিক বার বিচারপতিদের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন তদন্তকারীরা। যদিও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি তদন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রে যে সমস্ত খবর জানা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট গ্রেফতার হওয়া তাপস মণ্ডল, কুন্তল ঘোষ, নীলাদ্রি ঘোষরা যেভাবে একের পর এক নাম বলে চলেছেন তাতে নিঃসন্দেহে হোঁচট খাচ্ছে তদন্ত প্রক্রিয়া। যে নামগুলো সামনে আসছে সেটা কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে? নাকি সেখানে যথেষ্ট সারবত্তা রয়েছে?

 

কুন্তল ঘোষের মুখ থেকেই প্রথম হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম শোনা যায়। হৈমন্তীর কাছেই নিয়োগ দুর্নীতির সমস্ত টাকা রাখা আছে, এমনটাই নাকি কুন্তল বলেছেন তদন্তকারীদের। সেই সূত্রে পেশায় অভিনেত্রী হৈমন্তীর নাম সামনে আসার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। আবার এও শোনা যাচ্ছে নিয়োগ দুর্নীতির লেনদেনের বিষয়টি নিয়ে তাপস মণ্ডলের স্ত্রীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন কুন্তল। সেই সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের আতস কাচের নিচে থাকা গোপাল দলপতির মুখে শোনা গিয়েছে ‘কালীঘাটের কাকু’র কথা। এ বিষয়টি নিয়ে আবার গোপাল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খুল্লামখুল্লা জানাচ্ছেন তিনি ‘কালীঘাটের কাকু’র কথা শুনেছেন কুন্তল ঘোষের মুখে। এভাবেই একের পর এক নাম উঠে আসছে। তাতে তদন্ত প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হচ্ছে বলেই বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছেন।

 

তাই প্রশ্ন একটাই, এতসব নামের আড়ালে বড় মাথারা নিজেদের নতুন করে গুছিয়ে নেবেন না তো? দুর্নীতি কাণ্ডে মাথারা কি অন্তরালেই থেকে যাবেন? কে বা কাদের নির্দেশে এত বড় দুর্নীতি হয়েছে তা জানতে চায় রাজ্যবাসী। এটা জানার অধিকার সবার আছে। দুর্নীতি কাণ্ডে যেভাবে শাসকদলের একাধিক নেতার নাম জড়িয়েছে তাতে একেবারেই স্বস্তিতে নেই তৃণমূল। বিরোধীদের দাবি যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাঁরা আড়াল করতে চাইছেন দলের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্বকে। সত্যিই কি তাই? তবে কি মানিক ভট্টাচার্য, কুন্তল ঘোষের মতো গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা মুখ খুললে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে ঝড় বয়ে যাবে? এই চর্চা বহুদিন ধরেই চলছে।

 

তদন্তে গতি বাড়াতে বারবার বলছে আদালত। কিন্তু সেটা বাস্তবে হচ্ছে না বলেই ওয়াকিবহাল মহল মনে করে। তাই সত্যিই যদি কুন্তল ঘোষের মতো গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা তদন্তকারীদের বিপথে চালনা করার জন্য নানা নাম সামনে আনেন তাতে তো তদন্তের আরও দেরি হবে। এই জায়গায় তদন্তকারীদের ভূমিকার উপরই পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে।  কারণ গত কয়েক দিনের মধ্যে ‘কালীঘাটের কাকু’ অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র এবং হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম নতুন করে সামনে এসেছে। তাঁদের এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কিনা তা নিয়ে জনমানসে যথেষ্ট কৌতূহল রয়েছে। তাই সব মিলিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্ত কতটা এগিয়েছে বা আগামী দিনে কতটা এগোবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − three =