কী হবে ত্রিপুরায়? ক্রমশ চড়ছে উত্তেজনার পারদ! যুযুধান দু’পক্ষের দাবি তারাই আসছে ক্ষমতায়!

কী হবে ত্রিপুরায়? ক্রমশ চড়ছে উত্তেজনার পারদ! যুযুধান দু’পক্ষের দাবি তারাই আসছে ক্ষমতায়!

 

নিজস্ব প্রতিনিধি: বিগত কয়েক মাস ধরে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে টানটান  উত্তেজনা দেখা গিয়েছে। দাবি পাল্টা দাবিতে প্রচার জমে ওঠে নির্বাচন পর্বে। অবশেষে ভোটদান পর্ব সাঙ্গ হয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের এই ছোট্ট রাজ্যটিতে। আর তারপরেই নতুন করে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে ভোটের ফলাফল কি হবে সেই বিষয়টি নিয়ে। শাসক বিজেপি তার ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে, নাকি বাজিমাত করবে বাম-কংগ্রেসের মহাজোট? তিপ্রা মোথা কটা আসনে জিতে সরকার গঠনে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করবে, এই সমস্ত বিষয় নিয়ে জোর চর্চা চলছে ত্রিপুরা জুড়ে। অবশ্যই তার আঁচ এসে পড়েছে পড়শি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গেও। কারণ ত্রিপুরা ফলাফলের একটা প্রভাব অবশ্যই পড়বে বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনে। সেখানে যদি বাম-কংগ্রেস জোট জয়লাভ করে তাহলে পঞ্চায়েতে বাড়তি অক্সিজেন পাবে তারা। অন্যদিকে বিজেপি ত্রিপুরায় ক্ষমতা ধরে রাখতে পারলে বাংলাতেও তারা নতুন উদ্যমে তৃণমূলের বিরোধিতায় পথে নামবে।

 

 

বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ত্রিপুরায় ৮১ শতাংশ ভোট পড়েছে। তবে রাত পর্যন্ত ভোটাররা ভোট দিয়েছেন বিভিন্ন বুথে। তাই এবারও ভোট শতাংশ গতবারের মতো ৯১ শতাংশের কাছাকাছি চলে যাবে বলে অনেকেই মনে করছেন। উল্লেখ্য ত্রিপুরার প্রতিটি নির্বাচনেই ব্যাপক হারে ভোট পড়ে। যেটা পশ্চিমবঙ্গে দেখা যায় না। সাধারণভাবে বেশি ভোট পড়লে তা সরকারের বিরুদ্ধে যাচ্ছে বলে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করেন। কিন্তু ২০১৩ সালের ত্রিপুরার ভোট শতাংশ বলছে বিপুল ভোট পড়লেও সেবার  ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছিল সিপিএম। তবে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও বিপুল ভোট পড়ে এবং ক্ষমতায় আসে বিজেপি। তাই এবারে নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট এবং বিজেপি এই প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আশাবাদী ক্ষমতায় আসার ব্যাপারে।

 

বিগত কয়েক বছরে ত্রিপুরায় পুরসভা এবং একাধিক বিধানসভার উপনির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক হিংসা দেখা গিয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ শাসক বিজেপির সন্ত্রাসে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেননি। পুরসভা নির্বাচনে ব্যাপক হিংসার প্রতিবাদে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। যথারীতি বিজেপি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাই এবারের বিধানসভা নির্বাচন কতটা শান্তিপূর্ণভাবে হবে তা নিয়ে বিরোধীদের যথেষ্ট আশঙ্কা ছিল। তবে কিছু বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনা ছাড়া মোটের উপর ত্রিপুরার ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে বলেই নির্বাচন কমিশন মনে করে।

বিজেপির প্রধান প্রতিপক্ষ বাম- কংগ্রেস জোট কিছু বিক্ষিপ্ত হিংসার অভিযোগ ছাড়া সেভাবে সরব হয়নি। অর্থাৎ সার্বিকভাবে বিরোধীদের অভিযোগ দেখে মনে হচ্ছে যেভাবে ত্রিপুরায় নির্বাচন হয়েছে তাতে মোটের উপর খুশি তারা। আর বিরোধীদের এই মনোভাবই ভাবিয়ে তুলেছে বিজেপিকে। সবচেয়ে বড় কথা বিজেপির এক প্রার্থী একটি বুথে পুনর্নির্বাচন চেয়েছেন। এই উলটপুরাণে অবাকই হয়েছে রাজনৈতিক মহল। এসব ঘটনাতেই স্পষ্ট ত্রিপুরায় ক্ষমতা ধরে রাখার ব্যাপারে বিজেপি পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছে না। যদিও গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব দাবি করছেন ত্রিপুরায় আবারও ক্ষমতায় ফিরছেন তাঁরা। তবে সব জবাব মিলবে ২ মার্চ ভোটের ফলাফল প্রকাশের দিন। ততদিন পর্যন্ত দাবি পাল্টা দাবি চলতেই থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen + fourteen =