কলকাতা: ২২ গজে তিনি ছিলেন লেগস্পিনের রাজা৷ কব্জির মোচড় তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল শিল্পীর পর্যায়ে৷ লেগস্পিনের বিলুপ্ত ঘরানাকে প্রায় একার হাতেই ধরে রেখেছিলেন শেন কিথ ওয়ার্ন৷ তাঁর সমকালীন আরও এক স্পিনার সেই সময় ময়দানে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন৷ তিনি শ্রীলঙ্কার মুথাইয়া মুরলীধরন৷ তবে ক্রিকেট মাঠের বাইরেও তাঁর জীবন ওয়ার্নের মতো এতটা রঙিন ছিল না৷ লিজ হার্লি থেকে পর্ন তারকা, একাধিক সম্পর্ক, যৌন কেচ্ছায় নাম জড়িয়েছিল শেন ওয়ার্নের৷
আরও পড়ুন- কেমন ছিল ওয়ার্নের জীবনের শেষ ৩০ মিনিট?
ওয়ার্নের দুর্দান্ত স্পিনে বারবার বিভ্রান্ত হয়েছেন ব্যাটাররা৷ ১৪৫ টেস্টে ৭০৮ উইকেট কোনও মামুলি বিষয় নয়৷ তবে বল হাতে একাধারে তিনি যেমন মাঠে দাপিয়েছেন, তেমনই মাঠের বাইরেও তাঁর কম কীর্তি ছিল না৷ সেখানে তিনি যেন কোনও হলিউড তারকা৷ তাঁর পিছনে সর্বদাই ছুটছেন পাপারাৎজিরা৷ তিনিও পাপারাৎজিদের জন্য বিনোদনের মশলার অভাব রাখতেন না৷ কারণ ক্রিকেট ছাড়াও ওয়ার্নের জীবনে আরও অনেক কিছু ছিল৷ একবার সিডনির রেডিয়ো সঞ্চালক লরেন্স মুনি বলেছিলেন, ‘‘ওঁর (ওয়ার্নের) জীবনে টিন্ডার, বিয়ার, ডার্টস, জুয়া এবং ক্রিকেট— ব্যাস এই পাঁচটি জিনিস ছিল৷’’ যৌন কেলেঙ্কারিতে বারবার নাম জড়িয়েছে ওয়ার্নের৷ উঠেছে মাদক নেওয়ার অভিযোগ৷ শুধু তাই নয়, বেটিংয়ের ফাঁদেও পা পড়েছিল তাঁর৷ তবে ওয়ার্নের জীবনে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পাঁচটি যৌন কেলেঙ্কারি৷
হলিউড তারকা এলিজাবেথ হার্লির সঙ্গে এক সময় নাম জড়িয়েছিল ওয়ার্নের৷ তাঁদের মধ্যে বেশ মাখোমাখো সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল৷ তবে ২০১০ থেকে মাত্র তিন বছর টিকেছিল সেই সম্পর্ক৷ সেই সময় ওয়ার্নের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী সিমোন কালাহানের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ব্রিটিশ অভিনেত্রী লিজ হার্লি তখনও আইনত অরুণ নায়ারের স্ত্রী। তবে তাঁরা সেই সময় একসঙ্গে থাকতেন না৷ ২০১১ সালে অরুণের সঙ্গে লিজের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়৷
এক সময় লিজ এবং ওয়ার্নের সম্পর্ক ছিল পেজ থ্রি’র হট টপিক৷ তবে সে সম্পর্ক টেকেনি। শেন এবিষয়ে একবার বলেছিলেন, লিজের সঙ্গে তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক অভিনেতা হিউ গ্রান্টের বন্ধুত্বকে তিনি সহজ ভাবে মেনে নিতে পারেননি। অন্যদিকে, লিজের সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীন পর্নতারকা ক্লো কনরাডের সঙ্গে ওয়ার্নের ঘনিষ্ঠ ছবিতে ছয়লাপ হয়ে যায় পেজ থ্রি-র পাতা৷ যা লিজ-ওয়ার্নের সম্পর্কে ইতি টানতে সাহায্য করেছিল৷
স্ত্রী সিমোনের সঙ্গে প্রায় ১০ বছরের বিবাহিত জীবন কাটিয়েছেন অজি স্পিনার৷ তবে ২০০৫ সালে বিবাহিত ওয়ার্নের সঙ্গে নাম জুড়তে থাকে একের পর এক নারীর। কখনও ইংলিশ ছাত্রী লরা সেয়ার্স, কখনও টিভি অ্যাসিস্ট্যান্ট কেরি কলিমোর, বারবার তাঁরা প্রকাশ্যে প্রেমিক হিসাবে উল্লেখ করেছিল ওয়ার্নের নাম৷ একাধিক নারীর সঙ্গে ওয়ার্নের এই সম্পর্ক স্বভাবতই মেনে নিতে পারেননি সিমোন৷ ভেঙে যায় তাঁদের সম্পর্ক৷
২০০৫ সালে একটি ট্যাবলয়েডে দাবি করা হয়েছিল, কেরির সঙ্গে নাকি গাড়ির বনেটের উপর সঙ্গমে মত্ত হয়েছিলেন ওয়ার্ন। কেরির এক বন্ধুর কথায়, ‘‘ওয়ার্ন তো কেরিকে ছাড়তেই চান না। ঘরেবাইরে সবর্ত্র যৌনসঙ্গমের চেষ্টা করতেই থাকেন।’’ অন্য দিকে, সেয়ার্সের জানিয়েছিলেন, এক বার তাঁর সামনে সটান জামাকাপড় খুলে ফেলেন ওয়ার্ন। এর পর তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্কের প্রস্তাব দেন ওয়ার্ন৷
১৯৯৫ সালে সিমোনকে বিয়ে করেছিলেন ওয়ার্ন৷ জানা যায়, যৌন কেচ্ছায় তাঁদের সম্পর্কে ইতি পড়ার পরেও আবার সিমোনের সঙ্গে থাকার ইচ্ছা জাহির করেছিলেন ওয়ার্ন। সিমোন সেই সুযোগ দিয়েওছিলেন৷ কিন্তু আরও একবার তাঁকে ঠকানোর অভিযোগ ওঠে। প্রেমিকাকে টেক্সট মেসেজ করে ওয়ার্ন লিখেছিলেন, ‘ওগো সুন্দরী, এখন আমার বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলছি। আর (বাড়ির) পিছনের দরজা খোলা… ।’ কিন্তু প্রেমিকার বদলে সেই মেসেজ চলে যায় সিমোনের কাছে৷ ব্যাস!
২০০৬ সালে যখন ইংলিশ কাউন্টি হ্যামশায়ারের সঙ্গে চুক্তি তাঁর চুক্তি হয়, সেই সময় ওয়ার্নের উদ্দাম যৌনজীবনের ছবি ঘিরে বিস্তর বিতর্ক৷ হোটেলের ঘরে দু’জন ব্রিটিশ মডেলের সঙ্গে ওয়ার্নের নগ্ন ছবি ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক হয়৷
এখানেই শেষ নয়৷ ব্রিটিশ নার্স ডোনা রাইটকে অশ্লীল ফোনকল এবং মেসেজ পাঠিয়ে হেনস্থার অভিযোগও ওঠেছিল শেন ওয়ার্নের বিরুদ্ধে। সেই সময় তিনি অস্ট্রেলিয়ার সহ-অধিনায়ক৷ সেই সময় সিমোনের সঙ্গে সম্পর্ক টিকে ছিল তাঁর৷ স্ত্রী হিসাবেই ছিলেন। কিন্তু তাঁর এই আচরণে অজি ক্রিকেট মহলে ঢি ঢি পড়ে যায়৷ শাস্তি হিসাবে সহ-অধিনায়কত্ব হারিয়েছিলেন ওয়ার্ন।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>