কাঠমাণ্ডু: নেপালের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি টালমাটাল। সেই পরিস্থিতিতে বুধবার বুকে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। পদত্যাগ করার জন্য নেপালের বিভিন্ন মহল থেকে ওলির ওপর চাপ প্রয়োদ করা হচ্ছিল। এই পরিস্থিততে বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই শীতল ভবনে নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারির কাছে যান। আজই তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার নেপালের কমিউস্ট দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানে ওলি উপস্থিত ছিলেন না। তবে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব যেমন মাধব কুমার নেপাল, ঝালা নাথ খানাল, বামদেব গৌতম, নারায়ন কাজি শ্রষ্ঠা প্রধানমন্ত্রী ওলির পদত্যাগ দাবি করেছেন। ওলি কিছুদিন আগেই অভিযোগ করেছিলেন, ভারত নেপালে তাঁর সরকার ফেলে দিতে নয়াদিল্লিতে ঘন ঘন বৈঠক করছেন। অন্য দিকে, তাঁর দলের একাংশ দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশকে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ ওলি ও তাঁর সরকার। সেই ব্যর্থতা ঢাকা দিতে সমস্ত নজর ভারতের দিকে ঘোরাতে চাইছে রাজ্য।
জানা গিয়েছে, নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে বিভাজন দেখা দিয়েছে ওলিকে নিয়ে। একদল চাইছে ওলি পদত্যাগ করুক। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেপালকে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ তিনি। বুধবারও স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে কমিউনিস্ট পার্টির ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য ওলির পদত্যাগ দাবি করেন। মূলত ভারত সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করার পরেই দলের অভ্যন্তরেই ওলির পদত্যাগের দাবি উঠছে।
ওলি বলেছিলেন, দিল্লি থেকে এরকম খবর আসছে। নেপালের নতুন মানচিত্র প্রকাশের জেরেই ভারতে একের পর এক বৈঠক চলছে নেপালের বিরুদ্ধে। গত ১৩ জুন নেপালের পার্লামেন্টের লোয়ার হাউসে পাশ হয়ে যায় নতুন মানচিত্র সংক্রান্ত সেই বিল। সেই মানচিত্রে রয়েছে ভারতের লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখ, যা আসলে ভারতের উত্তরাখণ্ডের অংশ। গত ১৮ জুন সেই বিলে সম্মতি দিয়ে সই করেন নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছিলেন, নেপালের জাতীয়বাদ এতটা দুর্বল নয়। ভারতকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, নেপালের এই মানচিত্র বদলকে কেউ কেউ অপরাধের চোখে দেখছে। তাঁর মতে, আজ যদি তাঁর সরকার পড়ে যায়, তাহলে নেপালের হয়ে কেউ কথা বলবে না। তবে তাঁর দল এই ধরনের ফাঁদে পা দেবে না বলেই জানিয়েছেন তিনি।