দিল্লি: রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হচ্ছে ভারতের কোন শর্তে?পুতিনের এতো ভরসা?এদিকে ভারত আমেরিকার তলে তলে ডিল পাঁকা?পুতিনকে ব্যাকফুটে ফেলে,জেলেনেস্কিই হবেন নাকি উইনার?
আন্তর্জাতিক মহলে যে সম্ভাবনার কথা বারংবার উঠেছে এবার পুতিন কার্যত তাতেই শিলমোহর দিলেন।
ভারতের দেওয়া শর্ত মেনেই শেষ হয়ে যাচ্ছে তাহলে আড়াই বছর ধরে চলা রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ?
যুদ্ধের একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়। প্রথমে রাশিয়া তারপর ইউক্রেনে গিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাহলে কি যুদ্ধ বন্ধের জন্যই যে দুটো দেশ অলরেডি যুদ্ধে জড়িয়ে সেখানেই মোদীর সফর? বিশেষজ্ঞদের একাংশ তো এমনটাও আঁচ করেছিলেন, এবার হয়তো ভারতের মধ্যস্থতাতেই মিটবে এই যুদ্ধ! কিন্তু ভারত জানিয়ে দিয়েছিল আর যাই হোক রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে মধ্যস্থতা করতে নারাজ নয়াদিল্লি। ইউক্রেনে পা রাখার আগেও মোদী সাফ জানিয়েছিলেন ভারত শান্তির সেতু হতে চায়, কোন পক্ষ নিতে নয়। তবে কী, শান্তিপ্রিয় ভারত যে কথাটা বিশ্বাস করে, সেটাই মেনে নিলেন পুতিন জেলেনেস্কি? সমাধান পেতে মুখোমুখি কথাবার্তা এবং কূটনীতির পথ বেঁছে নিল এই দুই দেশ?
কারণ সম্প্রতি যখন বাইডেনের সঙ্গে মোদীর ফোনালাপে রাশিয়া ইরান যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, এদিকে আসন্ন শরৎ কালের মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার আহ্বান জানাচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, রাশিয়াকে রাজি করাতে ন্যাটো দেশগুলোকে চাপ দেওয়ার আহ্বান করছেন, তখন পুতুলের গলায় একেবারে অন্য সুর। মোদীর রুশ সফরের একমাস পেরিয়ে কিছুদিন কাটতে না কাটতেই রাশিয়ার প্রেসিেডেন্ট জানালেন, ইউক্রেন-রুশ যুদ্ধে মধ্যস্থতার কথা বলতে পারে ভারত, চিন, ব্রাজিল। এক্ষেত্রে প্রথমেই রয়েছে ভারতের নাম।
অনেকেই হয়তো জানেন না। গোটা বিশ্বের আড়ালেই হয়তো ঘটছে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শেষের সামঝতা। হ্যাঁ , অলরেডি ইস্তানবুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের সমঝোতার কথাবার্তা একটা মোটামুটি সহমতের জায়গায় কিছুটা পৌঁছেছে। এর ভিত্তিতে কথা এগোতে পারে বলে মনে করছেন পুতিন। অথচ এর আগেই একটা সময় ভ্লাদিমির পুতিন রাজশাহী উক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে একগুচ্ছ শর্ত চাপিয়েছিলেন। এমনকি বারংবার পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের হুমকি দিয়েছিলেন। গোটা বিশ্ব কার্যতো সেই ভয়ে সিটিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আড়াই বছর ধরে চলতে থাকা যুদ্ধে জেলেনেস্কির পাশাপাশি পুতিনেরও কম ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ব্যবসা-বাণিজ্য ও চরম ঘাটতি। আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপের এফেক্ট। সঙ্গে ইউক্রেনীয়বাহিনীর রাশিয়ার ভেতরে ঢুকে হামলা। তাহলে কি এইসব কারণেই অবশেষে মোদির কথা মেনে যুদ্ধে ইতি টানতে চাইছেন পুতিন? কারণ নরেন্দ্র মোদী তো বারবার বলেছেন যুদ্ধের সময় নষ্ট না করে, আলোচনার পথে হাঁটা উচিত। হ্যাঁ বিশেষজ্ঞরা তেমনটাই মনে করছেন। রাশিয়ার মস্কোতে মোদীর পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও ইউক্রেনের কিয়েভে সেদেশের প্রেসেডিন্ট জেলেন্সকির সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের পরই যুদ্ধের মধ্যস্থতা নিয়ে বড় বার্তা পুতিনের। রাশিয়ার নিউজ এজেন্সি বলেছে,’ আমরা আমাদের বন্ধু এবং অংশীদারদের সম্মান করি, যারা আমি বিশ্বাস করি, আন্তরিকভাবে এই সংঘাতের আশেপাশের সমস্ত সমস্যার সমাধান চান, প্রাথমিকভাবে চিন, ব্রাজিল এবং ভারত। আমি এই বিষয়ে আমাদের সতীর্থদের সাথে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখছি।’ যদিও এক্ষেত্রে ভারতের উপর নির্ভরশীলতা যেন একটু বেশিই রয়েছে রাশিয়ার। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ তো বলেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় ভারত বড় সাহায্য করতে পারে।’ কারণ ভারত ব্যালেন্স স্ট্রাটেজি জানে। রাশিয়া ইউক্রেন দু পক্ষের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো। তাই যেমন রাশিয়া ভারতকে এগিয়ে রাখছে এক্ষেত্রে তেমনি ইউক্রেন ও ভারতে ভরসা রাখছে। কারণ জেলেন আজকের অন্যতম উপদেষ্টা মেখাইল মনে করেছিলেন মোদির ইউক্রেন সফর বা এই ইনিশেটিভ রাশিয়ার উপর বিশেষ প্রভাব ফেলবে। কিন্তু সেটা না হলেও, ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের ক্ষেত্রে দু পক্ষই যে মোদীর শান্তি সেতুতে ভরসা রাখতে মুখিয়ে সেটা নতুন করে বলার দরকার পড়ে না।।