অচেনা বাংলাদেশ! পরিস্থিতি আউট অফ কন্ট্রোল?

কলকাতা: বাংলাদেশে সিচুয়েশন আউট অফ কন্ট্রোল! ঢাকায় নামলো সেনার ট্যাঙ্ক। কোনোরকমে প্রাণে বাঁচতে, জীবন হাতের মুঠোয় করে পালিয়ে আসছে ভারতীয়রা।আর বাংলাদেশী যারা কলকাতায় রয়েছেন, ভারতের…

কলকাতা: বাংলাদেশে সিচুয়েশন আউট অফ কন্ট্রোল! ঢাকায় নামলো সেনার ট্যাঙ্ক।

কোনোরকমে প্রাণে বাঁচতে, জীবন হাতের মুঠোয় করে পালিয়ে আসছে ভারতীয়রা।আর বাংলাদেশী যারা কলকাতায় রয়েছেন, ভারতের অন্যান্য জায়গায় রয়েছেন তাদের পরিস্থিতি কী? তাঁরা কী চাইছেন?গোটা বিশ্বের থেকে কার্যত এখন বিচ্ছিন্ন বাংলাদেশ। দেশটায় রীতিমতো আগুন জ্বলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা এখন সেনার কাছে ‘বড় চ্যালেঞ্জ’। যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের তার চোখে দেখা যাচ্ছে না।২০০৯ এর কথা মনে করাচ্ছে ঢাকায় সেনা ট্যাঙ্কের এই টহলদারি।রক্তাক্ত বিডিআর, বাংলাদেশ রাইফেলস বিদ্রোহের স্মৃতি উস্কে দিচ্ছে। প্রায় দেড় দশক পরে আবার সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্কের টহলদারি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। বাংলাদেশের এই রক্তক্ষয়ী আন্দোলন কোন দিকে গড়াচ্ছে, কী হতে যাচ্ছে, সমাধান কী? কেউ জানেনা। আর বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ১৫ হাজারের বেশি যে ভারতীয়রা রয়েছেন। তাঁদের কী? তাঁদের মধ্যে পড়ুয়ার সংখ্যা ৮৫০০। তাঁরা তো প্রতিটা মুহূর্ত কাটাচ্ছে অনিশ্চয়তার মধ্যে। অশান্ত পরিস্থিতিতে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে নয়াদিল্লির। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে যে ভারতীয় পড়ুয়ারা আটকে পড়েছেন, তাঁদের ফেরানো হচ্ছে।’’ পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের চার রাজ্য অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজ়োরামের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। এ রাজ্যের পেট্রাপোল, চ্যারাবান্ধার পাশাপাশি ত্রিপুরার আখাউড়া এবং মেঘালয়ের ডাউকির সীমান্তে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়েও ফেরানো হচ্ছে ভারতীয় পড়ুয়াদের।ভারতীয় পড়ুয়াদের বাংলাদেশ ছাড়ার প্রবণতা শুরু হয়েছে তখন, যখন কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে হিংসাত্মক আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার শুক্রবার বাংলাদেশ জুড়ে কার্ফু জারি করেছে।আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাতে নামানো হয়েছে সেনা।বন্ধ গোটা দেশের ইন্টারনেট পরিষেবা।

কোটা সংস্কারের আন্দোলন ক্রমশ যখন তীব্রতর হচ্ছে বাংলাদেশে। যখন হাসিনা সরকার আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিলেও তা খারিজ করে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। যখন আন্দোলনকারীরা বলছেন আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব, শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাই, তখন এই পরিস্থিতিতে দেশে ফেরা রিস্ক বুঝে অনেকে বাংলাদেশিই বাতিল করছেন উড়ানের টিকিট।

কলকাতায় বসেও উদ্বেগে বাংলাদেশের বহু মানুষ। চিকিৎসা-সহ নানা কাজে যাঁরা এই সময়ে কলকাতায় রয়েছেন তাঁরাও তাদের প্রিয় মানুষ পরিবার সকলের কথা ভেবে ভয়ে কাঁটা টেনশন বাড়ছে, চেয়েও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। শুধু তো ইন্টারনেট নয় মোবাইল পরিষেবাও বন্ধ। তাই অনেকে আবার, ১-২ দিন দেখে ফেরার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। বর্তমানে কলকাতায় থাকা বাংলাদেশিদের কমবেশি একটাই চাওয়া, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা কিংবা নিরাপদে দেশে ফেরা।

চাকরিতে সংরক্ষণ ব্যবস্থার সংস্কারের ভাবিকে কেন্দ্র করে যখন ধুন্ধুমার কাণ্ড বাংলাদেশে তখন এফেক্টেড হচ্ছে কলকাতার ব্যবসা বাণিজ্য। সদর স্ট্রিট, মার্কুইস স্ট্রিট, পাটুলির মতো জায়গায় সারা বছর বাংলাদেশের মানুষের যাতায়াত। তাঁদের জন্য বিভিন্ন হোটেল ও অতিথিশালা রয়েছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি সেই ব্যবসায় প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু এভাবে কতদিন? বাংলাদেশে বিক্ষোভের ঝাঁঝ বাড়ছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে ১০ও জনেরও বেশি মানুষ এর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি। বিরোধী বিএনপি এবং নিষিদ্ধ জামাতের সশস্ত্র কর্মীরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে সেনা কিভাবে গোটা বিষয়টাকে নিয়ন্ত্রণ করবে সেটাও দেখার।