দিল্লি: ঠিক কোন স্ট্যাটাসে এই মুহূর্তে ভারতে আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন শেখ হাসিনা?বাতিল ‘লাল পাসপোর্ট’!বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বড় স্টেপ,চাপ বাড়ল নয়াদিল্লির? এবার ঠিক কীসের ভরসায় শেখ হাসিনা ভারতে থাকতে পারেন নিশ্চিন্তে?
একদিকে যখন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে উঠছে ভুরি ভুরি অভিযোগ, তখন সেই ভারতবন্ধু শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে নিজেদের কাছে রেখেছে ভারত। কিন্তু এবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটা চালে ভারতের চাপ বাড়লো। এবার কি করবে নয়া দিল্লী? একদম মোক্ষম সময়, বাতিল করা হচ্ছে শেখ হাসিনার লাল পাসপোর্ট। যাকে বলে, কূটনৈতিক পাসপোর্ট। আর এতেই বিপদ দেখছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল হলে সমস্যায় পড়বে ভারত সরকার। কারণ, শেখ হাসিনাকে আপাতত কূটনৈতিক পাসপোর্টের বিধান মেনেই ভারতে থাকতে দিয়েছে নয়া দিল্লি। এই পাসপোর্ট বাতিল হলে, অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়ে যাবে ভারত।
তবে, শুধু শেখ হাসিনা নন, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী-সহ ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সকল মন্ত্রী, সাংসদদেরও কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু যত প্রশ্ন শেখ হাসিনাকে ঘিরে। কারণ, ৫ই আগস্ট থেকে টানা এখনও পর্যন্ত ভারতেই রয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, দিল্লির উপকণ্ঠে একটা ‘সেফ হাউসে’ই দুই বোনকে একসঙ্গে রাখা হয়েছে। তবে এই মুহূর্তে তাদের ঠিকানা কী, সেটা সরকারিভাবে কখনোই প্রকাশ করা হয়নি নয়াদিল্লির তরফে। এমনকি শেখ হাসিনা ঠিক কোন ‘ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাসে’ ভারতে রয়েছেন?
তিনি কি নিয়মিত ভিসায় এ দেশে আছেন? নাকি কোনো বিশেষ ভিসা দেওয়া হয়েছে তাঁকে? তিনি কি রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন? না এসব ব্যাপারেও অফিসিয়াল কোনো তথ্য সামনে আসেনি। শুধু পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এটুকুই জানিয়েছিলেন, ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনা ‘সাময়িকভাবে’ এই দেশে আসার অনুমোদন চেয়েছিলেন এবং তা মঞ্জুর হওয়ার পরই তিনি ভারতের মাটিতে পা রেখেছেন। কিন্তু এখন কী হবে? প্রশ্নটা উঠছে কারণ সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার যে কূটনৈতিক পাসপোর্ট আছে, তা এখনও বৈধ বলেই শেখ হাসিনাকে বিনা চিন্তায় ভারতে রাখতে পেরেছে মোদী সরকার। কূটনৈতিক পাসপোর্টের সুবাদে শেখ হাসিনা কোনও ভিসা ছাড়াই দেড় মাস পর্যন্ত ভারতে থাকতে পারেন। এই সময়ের মধ্যে কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল না করা হলে, আইনগতভাবে হাসিনাকে ভারতে রাখতে কোনও বাধা ছিল না। তার জন্য ভারতকে আলাদা করে কোনও ব্যবস্থাও নিতে হত না। ২০১৮ সালে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী সরকার এই বিষয়ে একটা ‘সংশোধিত ভ্রমণ ব্যবস্থা’ ডিল সাইন করেছিল।
কিন্তু, ঝোঁপ বুঝে কোপ মারলো, ইউনুস সরকার। শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট এবার বাতিল করা হচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে ভারতের কী করণীয়? বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, হাসিনাকে শিগগির এর বিকল্প কোনও ব্যবস্থা ভাবতে হবে। চিন্তা করতে হবে ভারত সরকারকেও। এই বিষয়ে ‘বিবিসি বাংলা’-র এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা কথাটা টেনে আনতে হয়। যেখানে বলা হচ্ছে, সেটাও কোনও বড় সমস্যা হবে না। কারণ এই ধরনের পরিস্থিতিতে ভারতের ‘প্ল্যান বি’ বা ‘প্ল্যান সি’ প্রস্তুত থাকে। এই ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সেই রকম বিকল্প পরিকল্পনা অলরেডি তৈরি আছে। তবে, সেই পরিকল্পনাগুলো কী? তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।