এক রাতের আঘাতে কাঁপল রাশিয়া! চিড় সমরাস্ত্রে! যুদ্ধক্ষেত্রে কী বার্তা দিল ইউক্রেন ?

Ukraine Drone Attack Russia ১ জুন, গভীর রাত। রাশিয়ার অন্তত দুইটি কৌশলগত বিমানঘাঁটি – ওলেনিয়া (মুরমানস্ক) ও ইরকুতস্ক (সাইবেরিয়া)—একযোগে কেঁপে ওঠে বিস্ফোরণে। কিছু বুঝে ওঠার…

Ukraine Drone Attack Russia

Ukraine Drone Attack Russia

১ জুন, গভীর রাত। রাশিয়ার অন্তত দুইটি কৌশলগত বিমানঘাঁটি – ওলেনিয়া (মুরমানস্ক) ও ইরকুতস্ক (সাইবেরিয়া)—একযোগে কেঁপে ওঠে বিস্ফোরণে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় রুশ বিমানবাহিনীর অভিজাত সামরিক বিমমান, Tu-95 ও Tu-22M বোমারু। সঙ্গী A-50 রাডার এয়ারক্রাফটও।

ইউক্রেন একযোগে আঘাত হানল ৬০০০ কিলোমিটারের ব্যবধানে, তিনটি টাইমজোনে, দুই মহাদেশীয় ফ্রন্টে। ধ্বংস হল ৪১টি কৌশলগত বিমান—রাশিয়ার স্ট্র্যাটেজিক বম্বার ফ্লিটের এক-তৃতীয়াংশ। এটাই এই যুদ্ধে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় আক্রমণ এবং সম্ভবত রাশিয়ার জন্য সবচেয়ে ব্যয়বহুল ক্ষতি।

নীরব স্ট্রাইক, বিশাল ক্ষতি

শত্রুপক্ষের আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করে, ইউক্রেনীয় স্পেশাল অপস ফোর্স ড্রোন ব্যবহার করে এই হামলা চালানো হয়। এই ড্রোনগুলো লঞ্চ হয় মোবাইল শিপিং কন্টেইনার থেকে, মাঝপথে ছাড়া হয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে। কোনও ম্যানুয়াল গাইডেন্স ছাড়াই নিশানায় পৌঁছয়, আঘাত হানে রানওয়ে ও খোলা ফাঁকে দাঁড়িয়ে থাকা বোমারু বিমানে।

ড্রোনের সংখ্যাটা ছিল ১০০-রও বেশি। ভিন্ন ধরনের, FPV ও কামিকাজে। রাশিয়ার ডিটেকশন সিস্টেম বুঝতেই পারেনি কোথা থেকে আঘাত আসছে। একদিকে বিস্ময়, অন্যদিকে নিখুঁত কৌশল। এটা নিছক একদিনের আক্রমণ নয়, এ এক নতুন ধরনের যুদ্ধচিত্র।

যুদ্ধ শুধু মাঠে হয় না, মস্তিষ্কেও হয়  Ukraine Drone Attack Russia

এই হামলা একটা বার্তা- ইউক্রেন যুদ্ধ ময়দানে দুর্বল হলেও, প্রযুক্তি ও কৌশলে দুর্বল নয়। এটি Admiral William McRaven-এর চার নীতির textbook উদাহরণ৷ পরিকল্পনা, সম্পূর্ণ গোপনীয়তা, বাস্তবভিত্তিক প্রস্তুতি এবং হঠাৎ আক্রমণ৷ অপারেশন এতটাই নিখুঁত ছিল যে রাশিয়া কোনও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। বিস্ময়ের জায়গাটা এখানেই। রুশ বিমানবাহিনী যে বিমানগুলো ব্যবহার করত ক্রুজ মিসাইল ছোঁড়ার জন্য, সেগুলো এখন ব্যবহার অযোগ্য। এতে শুধু অস্ত্রভাণ্ডার নয়, রাশিয়ার স্ট্র্যাটেজিক ডিটারেন্সও প্রশ্নের মুখে।

রাশিয়ার পাল্টাঘাত ও পারমাণবিক প্রশ্ন

ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাশিয়া ইউক্রেনে পাল্টা পাঠিয়েছে ৪০০-র বেশি ড্রোন। তবে এই পাল্টা হামলা মূলত প্রতিক্রিয়াশীল। মস্কো সরাসরি পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি না দিলেও, স্পষ্ট করেছে—এর জবাব হবে।

Tu-95 ও Tu-22M শুধু কনভেনশনাল যুদ্ধের অংশ নয়। তারা রাশিয়ার পারমাণবিক ত্রয়ীর অন্যতম স্তম্ভ। ফলে এই স্ট্রাইক রাশিয়ার স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিংয়ে বড়সড় ফাটল ধরাতে বাধ্য।

ড্রোন যুগের যুদ্ধে ভূমিকা উলটে যাচ্ছে

আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধ হোক বা হুথিদের সৌদি তেল স্থাপনা আক্রমণ—ড্রোন এখন কোনও পরিপূরক প্রযুক্তি নয়, বরং মূল অস্ত্র। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সেই ট্রেন্ডকে প্রতিষ্ঠা করেছে। এখন যুদ্ধ মানে সেনা সমাবেশ নয়, বরং ড্রোন স্কোয়াড ও ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার।

ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেভাবে ড্রোন স্কোয়াড ব্যবহার করছে তা দেখিয়ে দিল, ভবিষ্যতের যুদ্ধ হবে ‘স্বল্প খরচে সর্বোচ্চ ধ্বংসসাধনের’ খেলায়। FPV ড্রোন, ওয়্যার-কন্ট্রোলড ড্রোন—সব মিলিয়ে এই স্ট্রাইক ছিল drone warfare-এর এক নিখুঁত ট্রায়াল। এবং এই ড্রোন-নির্ভর যুদ্ধের অর্থ হলো—যেখানে যুদ্ধ হবে, সেখানেই থাকবে surveillance, data, algorithm ও নির্ভুল execution।

ভারতের জন্য সরাসরি সতর্কবার্তা

২০২১ সালে জম্মুর বিমানঘাঁটিতে পাকিস্তানপন্থী গোষ্ঠীর ড্রোন হামলা ছিল এক ধরনের প্র্যাকটিস রান। ক্ষতি তেমন হয়নি ঠিকই, কিন্তু প্রমাণ হয়ে গিয়েছিল ভারতের বিমানঘাঁটিও ঝুঁকিতে। এখন প্রশ্ন, ইউক্রেন যা করেছে, পাকিস্তান যদি কোনও দিন ভারতের একাধিক বেসে এই ধরনের স্বয়ংক্রিয় ড্রোন ছাড়ে?সব যুদ্ধবিমান আজ খোলা মাঠে থাকে, স্যাটেলাইট থেকে সহজেই চিহ্নিতযোগ্য। প্রশ্ন উঠছে—ভারত কি তৈরি?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন- ভারতের উচিত বিমানঘাঁটিতে blast-proof hangar তৈরি করা৷ নির্ভরযোগ্য counter-UAS প্রযুক্তি তৈরি করা৷ সেনা, নৌ ও বিমান ঘাঁটিতে redundancy পরিকল্পনা করতে হবে৷

World: Ukraine war update, Russian bomber destruction, nuclear triad impact, Tu-95 destroyed, Tu-22M hit, Olenya Irkutsk attack, FPV drone warfare, kamikaze drones, military strategy, Russian air force losses.