করোনা রুখতে ভ্যাকসিন ঠিক কত দূরে? কোথায় দাঁড়িয়ে গবেষণা?

করোনা রুখতে ভ্যাকসিন ঠিক কত দূরে? কোথায় দাঁড়িয়ে গবেষণা?

নয়াদিল্লি: যখন করোনা ধীরে ধীরে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, তখন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন সাধারণ জনতা৷ কিন্তু, পরে মিলেছিল আশ্বাস। খুব তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে যাবে। সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে, সেই ভ্যাকসিন তৈরি হতে বাধ্য৷ এই ভ্যাকসিন তৈরি হলে চিন্তার কিছু নেই৷ কিন্তু, জানেন কি, এই মুহূর্তে কোথায় দাঁড়িয়ে করোনা টিকা তৈরির কাজ?

একথা সত্যি, ভ্যাকসিন তৈরি হলে ভয়ের কিছু নেই। ইতিহাস প্রমাণ আছে, বর্তমান পৃথিবীতে বহু রোগ নির্মূল হয়ে গিয়েছে শুধু ভ্যাকসিনের জেরে৷ কিন্তু ইতিহাসে এটাও দেখা যায়, কোনও ভ্যাকসিন  এত সহজে তৈরি হয় না। ভ্যাকসিন তৈরি হতে বেশ সময় লাগে। তাই করোনা এখন উপদ্রব করছে, আর ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে যাবে, তা কখনই হয় না।  তবে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রথমে তিন ধাপে ভ্যাকসিন পরীক্ষা করা হবে। তারপরে তা বাণিজ্যিক আকারে তৈরি করতে হবে৷ খুব একটা সহজ কথা নয়। সময় তো লাগবেই। তবে বেশ কিছু সংস্থা করোনা ভ্যাকসিনে বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়েছে৷

১. যেমন ধরা যাক অক্সফোর্ড।  একটি বহুজাতিক সংস্থার সঙ্গে করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করছে।  প্রথম পর্যায়ে পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে পরীক্ষা শুরু হয়েছে।  ইংল্যান্ডে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে যাওয়ার কারণে ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার ভ্যাকসিন পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

২. তবে আমেরিকার একটি সংস্থা করোনার ভ্যাকসিন তৈরির দিক থেক অনেকটা এগিয়েছে। প্রথম দুই পর্বের পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছে। তৃতীয় পর্বের পরীক্ষা শুরু হয়েছে।  প্রথম দুই পর্বের পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফল মিলেছে।আশা করা হচ্ছে, সামনের বছরের শুরুতেই করোনা ভ্যাকসিন ওই সংস্থা বাজারে আনতে পারবে।

৩. আমেরিকার একটি সংস্থা আধুনিক ডিএনএয়ের পরীক্ষা চালু করেছিল। ৩৬ জনের ওপর এই পরীক্ষা করেছিল। কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয় ও চতুর্থ  পর্যায়ে এই পরীক্ষা করা  হবে।

৪. আমেরিকা, চিন ও জার্মানের সংস্থা একযোগে একটি করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করার চেষ্টা করে। বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখতে পাওয়া গিয়েছে। তবে তিন সংস্থার তরফে আশা করা হচ্ছে ২০২০ সালের মধ্যেই করোরনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করা যাবে।

৫.  মে মাসের শুরুর দিকে চিনের একটি ভ্যাকসিনের পরীক্ষা করা শুরু হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ভালো ফল পাওয়া যায়।  চিনা সেনাবাহিনীর তরফে স্পেশাল নিডেড ড্রাগ বলে সম্বোধিত করা হয়েছে।  সেনাবাহিনীতে এই টিকা দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

৬.  ভারতের হায়দরাবাদের বায়োটেক কোম্পানি করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। চলতি মাসে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে পরীক্ষা শুরু হবে। এখানে প্রায় ১০০০ স্বেচ্ছাসেবকের ওপর করোনা ভাইরাসের ওপর পরীক্ষা করা হবে। এছাড়াও ভারতকে আরও দুটো সংস্থার তৈরি ভ্যাকসিনকে হিউম্যান ট্রায়ালের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 1 =