সুস্থ হয়ে উঠলেও ফের করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

সুস্থ হয়ে উঠলেও ফের করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

 

নয়াদিল্লি: কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না করোনা৷ সুস্থ হয়ে উঠলেও নতুন করে বাড়ছে করোনা অস্বস্তি৷ নতুন করে আক্রান্তদের থেকে ফের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ এমনই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷

তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে জানানো হয়েছে, করোনা আক্রান্ত কোনও রোগী সুস্থ হয়ে উঠলেও দ্বিতীয়বার ওই রোগ প্রভাব বাড়াচ্ছে৷ ফলে, দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়া রুখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জরুরি৷ বাড়তে গৃহবন্দি থাকাও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে৷

ইতিমধ্যেই মারণ করোনার তাণ্ডবে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে৷ এখনও পর্যন্ত ২ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷ আক্রান্ত ২৯ লক্ষ ৪০ হাজারে৷ মাত্র ১৬ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে৷

সিঙ্গাপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও ডেটা ড্রিভেন ইনোভেশন ল্যাবের গবেষকরা জানিয়েছেন, গোটা বিশ্ব থেকে করোনা সম্পূর্ণ বিদায় নিতে বছর শেষ হয়ে যাবে৷ কিছু না হলেও ডিসেম্বর মাস কেটে যেতে পারে৷ তবে, করোনার প্রকোপ কমতে শুরু করবে আগামী মে মাসের শুরু থেকেই৷ গবেষণা বলছে, পৃথিবীর ৯৭ শতাংশ দেশ থেকে করোনা তাণ্ডব শেষ হতে পারে আগামী জুন-জুলাই মাস নাগাদ৷ ভারতে ৯৭ শতাংশ করোনা প্রকোপ কেটে যেতে পারে মে মাসের শেষে বা জুন মাসের শুরুতে৷ ভারতে জুলাই মাস নাগাদ সম্পূর্ণ করোনমুক্তি ঘটতে পারে বলেও আশার বাণী শুনিয়েছেন গবেষকরা৷ স্পষ্টভাবে বলতে গেলে জুলাই মাসের তৃতীয় কিংবা চতুর্থ সপ্তাহের করোনা ভারত থেকে বিদায় নিতে পারে বলে গবেষকরা মনে করছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 + 17 =

করোনায় তরুণদের ঝুঁকি কোনো অংশে কম নয়, সতর্ক করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

থমাস জেফারসন ইউনিভার্সিটির মেডিসিন বিভাগের প্রফেসর রোজ সামার বলছেন করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে বয়সভিত্তিক কোনো ভবিষ্যৎ বাণী করা যায় না। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে সেই ব্যক্তির শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর। অর্থাৎ এটা একটা লটারির মতন যে ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বিশেষে কার শরীরে কোন ভাইরাস কতটা প্রভাব ফেলতে পারে।

নয়াদিল্লি: শনিবার করোনা সংক্রামণে মৃত্যু হয়েছে ৩৮ বছর বয়সী একজনের। সম্প্রতি কাতার থেকে বিমানে কলকাতায় এসেছিলেন ৩৮ বছরের ওই যুবক। সেখান থেকে ট্রেন ধরে বিহারের মুঙ্গেরে নিজের বাড়িতে ফিরেছিলেন। বাড়ি ফেরার পর জ্বর, সর্দি-কাশির উপসর্গ দেখা দেওয়ায় গত শুক্রবার তাঁকে পাটনার এইমসে ভর্তি করা হয় ওই ব্যক্তির শ্বাসকষ্টও শুরু হয়েছিল। তাঁর লালা পরীক্ষার জন্য রাজেন্দ্র মেমোরিয়াল গবেষণা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। তখনই ‘কোভিড-১৯ পজিটিভ’ ধরা পড়ে । তবে কিডনি ফেইলিওর হওয়ায় রিপোর্ট হাতে আসার আগেই শনিবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর।  

সুতরাং শুরুতে যেরকম ধারণা করা হচ্ছিল যে করোনাভাইরাসের কারণে বয়স্ক ব্যক্তিরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন, নতুন কয়েকটি পরিসংখ্যান প্রকাশিত হওয়ার পর সেই ধারণা পাল্টানোর সময় এসেছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। বরং সম্ভাবনা কম মনে করে সামাজিক মেলামেশা বা যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের মধ্যেও যে এই রোগের সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকবে সেবিষয়ে সতর্ক করে দিল হু। তরুণদের মধ্যে এই ভাইরাস সম্পর্কে কম সতর্ক থাকার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হু।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাসচিব টেড্রোস বলেছেন তরুণদের বেপরোয়া পদক্ষেপ তাঁদের পাশাপাশি অন্যান্যদেরও জীবন সংশয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের মাধ্যমেও এই ভাইরাস বয়স্কদের মধ্যেও মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে সে বিষয়েও সতর্ক করেছে।

শুক্রবার পর্যন্ত ফিলাডেলফিয়ার একটি রিপোর্টে দেখা গেছে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সীরা। সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট করোনা আক্রান্তের ২০% কমবয়সী।

এসম্পর্কে থমাস জেফারসন ইউনিভার্সিটির মেডিসিন বিভাগের প্রফেসর রোজ সামার বলছেন করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে বয়সভিত্তিক কোনো ভবিষ্যৎ বাণী করা যায় না। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে সেই ব্যক্তির শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর। অর্থাৎ এটা একটা লটারির মতন যে ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বিশেষে কার শরীরে কোন ভাইরাস কতটা প্রভাব ফেলতে পারে।

 

চীনের ঘটনা গুলি সমীক্ষা করে দেখা গেছে কোভিড-১৯এর মারাত্মক প্রভাব জোরদার প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপরেও প্রভাব ফেলেছে। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় 'সাইটোকাইন স্টর্ম' বা  'সাইটোকাইন ঝড়' বলা হয়। যা এর আগে করোনা পরিবারের অন্য দুই সদস্য সার্স এবং মার্স- এর ক্ষেত্রেও দেখা গেছে। সাইটোকাইনস হ'ল প্রোটিন, পেপটাইডস বা গ্লাইকোপ্রোটিনের একটি বৃহত গোষ্ঠী যা প্রতিরোধ ব্যবস্থার নির্দিষ্ট কোষ দ্বারা নিঃসৃত হয়। সাইটোকাইনস একধরণের সংকেত অণু যা প্রতিরোধ ক্ষমতা, প্রদাহ এবং হেমাটোপয়েসিসের মধ্যস্থতা এবং নিয়ন্ত্রণ করে।

ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভেনিয়া স্কুল অফ ভেটেরিনারি মেডিসিনের অধ্যাপক ক্রিস্টোফার হান্টার বলেছেন যে সাইটোকাইন ঝড় বলে বোঝায় “খুব শক্তিশালী প্রতিরোধের মূলক প্রতিক্রিয়াজনিত ক্ষয়ক্ষতি”।  এটি যেকোনও সংক্রমণের প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে এবং কিছু জেনেটিক থেরাপির ক্ষেত্রে ঘটতে পারে।

সামার বলছেন, এই ধরণের 'সাইটোকাইন ঝড়' শ্বাসযন্ত্রের কাজ বন্ধ করে দিতে পারে এবং তা যেকোনও বয়সেই  হতে পারে।  কোভিড-১৯এর মত সাইকোটাইন প্রতিক্রিয়া তাদের শরীরে হয়েছে তাদের ফুসফুসে একটা ক্ষত বা ফাইব্রোসিস তৈরী হচ্ছে। তবে সুখের কথা একটাই মে বেশিরভাগ মানুষের ফুসফুস প্রতিবছর নিজেকে পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম। তাই এই কৃষ্ণ বেশিদিন স্থায়ী হবে না।

তবে শেষে আবারও উল্লেখ করতেই হচ্ছে যে, বয়স নয় শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা অনুসারে শরীরে প্রভাব বিস্তার করে কোভিড-১৯। তাই শিশু-কিশোর-তরুণ-বৃদ্ধ নির্বিশেষে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের একটাই উপায়, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে নির্দিষ্ট সতর্কতা অবলম্বন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen + thirteen =