স্পাইসজেটের যে যাত্রী দেওয়ানকে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একজন পাইলট মারধর করে রক্তাক্ত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি দিল্লির বিমানবন্দরে তাঁর পরিবারের সামনে ঘটে যাওয়া এই হামলার ঘটনাটি মেনে নিতে হিমশিম খাচ্ছেন। এক সাক্ষাৎকারে অঙ্কিত দেওয়ান ঘটনাটিকে 'খুবই উদ্বেগজনক' বলে বর্ণনা করেছেন এবং তার স্ত্রী ও সন্তানদের মানসিক আঘাতের কথা তুলে ধরেছেন।
দেওয়ান এর আগে অভিযোগ করেছিলেন যে, ক্যাপ্টেন বীরেন্দ্র সেজওয়াল তাকে মারধর করেছেন যখন তিনি পাইলটকে বোর্ডিং লাইনে লাইন ভাঙতে বাধা দেন। তিনি বলেন, "আমার মনে হয় যেভাবে ঘটনাটি ঘটেছে। যেভাবে মানুষ এত দ্রুত শারীরিক সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে ও কাউকে আক্রমণ করে, তা অত্যন্ত জঘন্য। আমি বিমানবন্দরে এমনটা আশা করিনি। রাস্তায় এমনটা প্রায়ই ঘটে, কিন্তু বিমানবন্দরে এটা খুবই, খুবই উদ্বেগজনক।" এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস পাইলটের আচরণের নিন্দা করেছে এবং তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে।
ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে দেওয়ান বলেন, ঘটনাটি নিরাপত্তা তল্লাশির সময় ঘটেছিল। যেহেতু তারা একটি স্ট্রলারে করে একটি শিশুকে নিয়ে ভ্রমণ করছিলেন, তাই কর্মীদের ব্যবহৃত নিরাপত্তা তল্লাশির লাইনটি ব্যবহার করার জন্য তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি অঊিযোগ করেন, "একজন কর্মী আমাকে আমার মোবাইলটি সামনে রাখতে বলেছিলেন। কিন্তু আমি আপত্তি জানাই। তখনই ক্যাপ্টেন বীরেন্দ্র তেজওয়াল 'এই লোকগুলো কোথা থেকে আসে' এমন কিছু একটা বলে আমাকে (আনপড়) অশিক্ষিত বলেন। বাদানুবাদের পর তিনি লাইনটি ভেঙে ভেতরে ঢুকে যান; আমি তল্লাশি এলাকায় যাই।" তিনি অভিযোগ করেন, তল্লাশির সময় পাইলট ফিরে এসে তাঁকে মারধর করেন। তিনি বলেন, "আমি জানি না কেন তিনি একজন যাত্রীকে অশিক্ষিত বলার সিদ্ধান্ত নিলেন। এতে আমি ক্ষুব্ধ হয়েছিলাম। আমরা দুজনেই একে অপরকে গালিগালাজ করি। এটা শুধু একটি মৌখিক বাদানুবাদ ছিল এবং আমি আশা করিনি যে তিনি এসে আমাকে মারবেন। এভাবেই ঘটনাটি গুরুতর আকার ধারণ করে।"
দেওয়ান আরও দাবি করেন যে তার স্ত্রী হামলার ঠিক আগে পাইলটকে একজন নিরাপত্তা কর্মীকে বলতে শুনেছিলেন যে তিনি তাঁকে (দেওয়ানকে) মারধর করবেন। "তারপর তিনি এসে আমাকে আক্রমণ করেন। সিআইএসএফ-এর উচিত ছিল তাকে থামানো। আমি বেশ অবাক যে তারা কিছুই করেনি।" তিনি আরও বলেন, সেই জায়গায় মাত্র দুজন সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) কর্মকর্তা ছিলেন, যাদের মধ্যে একজন এক্স-রে মেশিন চালাচ্ছিলেন এবং অন্যজন যাত্রীদের তল্লাশি করছিলেন। এছাড়াও, একজন মহিলা কর্মকর্তাও সেখানে ছিলেন। হামলায় দেওয়ান গুরুতর আহত হননি, কিন্তু ব্যথা এখনও রয়ে গেছে। তিনি বলেন, "আমার কোনো সেলাই পড়েনি। কিন্তু আমার শরীরে অনেক ব্যথা।" এর চেয়েও খারাপ ছিল তার সন্তানদের মানসিক আঘাত।
তিনি বলেন, "সন্ধ্যার মধ্যে আমার মেয়েকে কিছুটা স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল। কিন্তু ফ্লাইটের সময় সে খুব বিচলিত ছিল। সে এর আগেও অনেকবার বিমানে চড়েছে, কিন্তু এই প্রথমবার সে উড়তে ভয় পাচ্ছিল। আমার স্ত্রী নিজেকে শক্ত রেখেছিল, কিন্তু রাতে বাচ্চারা ঘুমিয়ে পড়ার পর সে তার মানসিক চাপ আর ধরে রাখতে না পেরে কাঁদতে শুরু করে। এটা সবার জন্যই একটি মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা ছিল।"
এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস পাইলটকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আগে একটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন