মহাজনের মতো টাকা জমাচ্ছে রাজ্য”: ডিএ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে তীব্র ভর্ৎসনা

নয়াদিল্লি: রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য ডিএ (ডিয়ারনেস অ্যালাওয়েন্স বা মহার্ঘ ভাতা) নিয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। সুপ্রিম কোর্টে চলতি শুনানিতে রাজ্য সরকারের ভূমিকা…

supreme court on da case

নয়াদিল্লি: রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য ডিএ (ডিয়ারনেস অ্যালাওয়েন্স বা মহার্ঘ ভাতা) নিয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। সুপ্রিম কোর্টে চলতি শুনানিতে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে কঠোর ভাষায় তিরস্কার করল বেঞ্চ। বুধবার শুনানির শুরুতেই বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি পি কে মিশ্র তাদের কড়া পর্যবেক্ষণে জানান, “আগেকার দিনের মহাজনদের মতো আচরণ করছে রাজ্য সরকার। টাকা জমিয়ে রেখে অন্য জায়গায় খাটানো হচ্ছে।”

ডিএ মামলার শুনানি

মঙ্গলবার থেকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে শুরু হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত ডিএ মামলার বিস্তারিত শুনানি। মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের পক্ষে সওয়াল করেন প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল। তাঁর যুক্তি ছিল, ডিএ কোনও মৌলিক অধিকার নয়; বরং এটি রাজ্যের আর্থিক অবস্থার উপর নির্ভর করে সরকার নির্ধারণ করে থাকে।

এই বক্তব্যের জবাবে মঙ্গলবারই বিচারপতি করোল কটাক্ষের সুরে বলেন, “আপনারা যে কোনও পরিমাণ ডিএ দিতে পারেন, কিন্তু দয়া করে দিন। আপনার ক্লায়েন্টকে (অর্থাৎ রাজ্য সরকারকে) বলুন।”

বুধবার ছিল সরকারি কর্মচারীদের তরফে সওয়াল করার দিন। তাঁদের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টকে জানান, ২০০৬-২০০৮ এবং ২০১৯-২০২১- এই দু’টি সময়পর্বে রাজ্য সরকার কোনও ডিএ দেয়নি। আদালতের কাছে এই তথ্য সামনে আসতেই, রাজ্য সরকারের উদ্দেশে তীব্র মন্তব্য করেন বিচারপতিরা।

রাজ্যের যুক্তি ও তার বিরুদ্ধে প্রশ্ন supreme court on da case

রাজ্যের বক্তব্য, ডিএ প্রদানের অর্থরাজস্ব নেই সরকারের হাতে। আদালতে পেশ করা যুক্তিতে বলা হয়, “রাজ‍্যকে টাকা জোগাড় করতে হলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ঋণ নিতে হবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঋণ দেবে কি না, সেটাও নির্ভর করে আমাদের ধার পরিশোধের ক্ষমতার উপর। তারপর বিধানসভায় আনতে হবে অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন বিল। সব মিলিয়ে এই প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ।”

কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এই যুক্তিকে খুব একটা সহানুভূতির চোখে দেখেনি। বরং বিচারপতিরা পর্যবেক্ষণ করেন, “রাজ্য টাকা জমিয়ে রেখে অন্য খাতে ব্যবহার করছে। সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য দেওয়া হচ্ছে না।”

‘মৌলিক অধিকার’ কি ডিএ?

এই মামলার কেন্দ্রীয় প্রশ্নের মধ্যে অন্যতম হল, ডিএ কি সরকারি কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার? মঙ্গলবার শুনানির শুরুতেই এই প্রশ্ন ঘিরে জোরদার সওয়াল-জবাব হয় আদালতে। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ স্পষ্ট করেছে, রাজ্য সরকার কোনও অজুহাত দেখিয়ে কর্মচারীদের ন্যায্য দাবিকে দীর্ঘদিন অস্বীকার করতে পারে না।

পরবর্তী শুনানির দিকেই নজর

এখন প্রশ্ন, সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে রাজ্য সরকার তাদের অবস্থানে কোনও পরিবর্তন আনে কি না। আর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, এই মামলার রায় রাজ্যের লক্ষাধিক সরকারি কর্মচারীর ভবিষ্যতের দিক নির্ধারণ করবে।

Bengal: The Supreme Court has sharply criticized the West Bengal government in the ongoing DA case, accusing it of acting like a “money lender” by withholding employees’ allowances. The court’s remarks came during the detailed hearing of the long-standing legal battle.