ছবিতে শেষমেষ কতটা রইল গেরুয়া বিকিনি? এত বিতর্কের পর কেমন হল ‘পাঠান’?

ছবিতে শেষমেষ কতটা রইল গেরুয়া বিকিনি? এত বিতর্কের পর কেমন হল ‘পাঠান’?

মুম্বই: পাঠান ঝড়ে কাবু গোটা দেশ৷ এই ছবিতে আস্ত একটা ‘স্পাই ইউনিভার্স’ তৈরি করছে ‘যশরাজ ফিল্মস’। ছবির গোড়া থেকেই যা স্পষ্ট। এ এমন এক ব্রহ্মাণ্ড যেখানে নায়কই সুপারহিরো। সে অমর-অপরাজেয়। কোনও কিছুই যাকে ছুঁতে পারবে না। সে যে কোনও মূল্যে দেশকে বাঁচাবেই। আর নায়িকা? পায়ে হাই হিল আর বিকিনিতে লাস্য ঝরিয়েও অবলীলায় দুষ্টের দমন করবে। গুলি খেলেও যাঁর মেকআপ আর হেয়ার থাকবে টিপটপ! পাঠান হল সেই ধাঁচেরই ছবি৷ যাঁর পুরোটাই অ্যাকশনে মোড়া৷ তবে ‘পাঠান’ বন্ড ছবি হতে হতেও হল না৷ এর জন্য শুধু চিত্রনাট্যই নয়৷ দায়ী আরও অনেক কিছু৷ 

 

আরও পড়ুন- ‘পাঠান’ দেখতে গিয়ে বিপত্তি! ছাদ ভেঙে পড়ল দর্শকদের মাথায়, আহত অন্তত পাঁচ

জানা গিয়েছে সেন্সরের কোপে পড়ে এই ছবিতে ১০টিরও বেশি অংশে কাঁচি চলেছে৷ এর বেশির ভাগটাই অবশ্য সংলাপ। বাদ পড়েছে কিছু গালিগালাজও৷ তাতে ছবি হয়তো ‘ইউএ’ সংশাপত্র পেয়ে গিয়েছে৷ কিন্তু ছবির জৌলুল কিছুটা ফিকে হল না কি? আন্তর্জাতিক মানের গুপ্তচর যখন তার শত্রুর মুখোমুখি দাঁড়ায়, তখন তারা কি এত মার্জিত ভাষায় কথা বলে? বন্ডের দর্শকরা এমনটাতে অভ্যস্ত নন। এই সব অংশ বাদ না পড়লে হয়তো ছবির গল্প আরও খানিকটা বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারত। 

এদিকে, ‘পাঠান’ মুক্তির আগেই বিতর্কের শিরোনামে চলে এসেছিল ‘বেশরম রং’৷ এই গানের দৃশ্যে দিপীকার গেরুয়া বিকিনি নিয়ে বিস্তর বিকর্ক হলেও তা বাদ পড়েনি৷ বরং বেশ দিব্যই তা পরেছেন নায়িকা৷ কয়েক সেকেন্ডের পর সেটির উপরে একটি স্যারং চাপালেও নায়িকার লাস্য কমেনি৷ তাছাড়া সেই গেরুয়া বিকিনিতেই ছবির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিকোয়েন্স শুট করা হয়েছে৷ ‘বেশরম রং’ গানের পরও নায়িকা বেশ কিছুক্ষণ এই বেশেই ছিলেন। সেই সঙ্গেই যেন  বুঝিয়ে দেন গেরুয়া বিকিনি দেশের তরুণদের ‘বিপথে’ নিয়ে যাওয়ার জন্য উস্কানি দেয় না, বরং নায়ককে বাঁচায়, রক্ষা করে দেশকে৷ ফলে সব বিতর্কের শেষে জয় হয় গেরুয়া বিকিনিরই!

এই ছবির গল্প তেমন ভাবে ভাবায় না। এ ছবির চিত্রনাট্যে দেশের অন্যতম সিক্রেট এজেন্ট ‘পাঠান’ (শাহরুখ খান)। যে একপ্রকার লৌহমানব৷ হাজার চোটেও ঘুরে দাঁড়ায়। গুলি, গ্রেনেড থেকে মিসাইল— কোনও কিছুই তাকে হারাতে পারে না। পাঠান যে মিশনেই যায়, সেই মিশন কখনও ব্যর্থ হয় না…৷  অন্যদিকে, রুবিনা   অর্থাৎ দীপিকা পাড়ুকোন শত্রু দেশের গুপ্তচর। একটি মিশনে নেমে দু’জনে কাছাকাছি আসে৷ এর পর গল্পে একাধিক টুইস্ট আসে৷ বিশ্বাসঘাতকতার পরও বুদ্ধিমান ভিলেন (জন আব্রাহাম)-কে হারিয়ে শেষ মুহূর্তে দেশকে বাঁচানো— ক্রমপর্যায়ে সাজানো হয়েছে চিত্রনাট্য। তবে ‘পাঠান’ অ্যাভেঞ্জার্স কিংবা জেমন বন্ড নন৷ তেমন গল্পের আশা করলে ভুল হবে৷ কারণ এই ব্রহ্মাণ্ড সবে তৈরি হল। এখনই এত জটিল গল্প লেখার সময় আসেনি। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ব্রহ্মাণ্ড যত বিস্তার লাভ করবে,  নির্মাতারাও  সে দিকে মনোনিবেশ করবে৷ তেমনটাই আশা করা যায়৷ তবে হাতে পপকর্ন নিয়ে ‘পাঠান’-এর জমজমাট অ্যাকশন ভালোই উপভোগ করা যায়৷