প্যালেস্টাইন ভূ-খণ্ডের প্রেসিডেন্ট আব্বাসকে ফোন মোদীর! চাপে পড়েই মোদীর এই অবস্থান?

প্যালেস্টাইন ভূ-খণ্ডের প্রেসিডেন্ট আব্বাসকে ফোন মোদীর! চাপে পড়েই মোদীর এই অবস্থান?

নয়াদিল্লি:  রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে যখন ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তখন সবার মুখে মুখে শোনা যেত সেই সমস্ত ঘটনা। কিন্তু এখন ক্ষয়ক্ষতি আগের থেকে কমলেও যুদ্ধ সেখানে থামেনি। সাধারণ মানুষ চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু আজ ক’জনের মুখে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা শোনা যায়? একই ভাবে ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে ইজরায়েল-হামাসের মধ্যে। কবে যুদ্ধ থামবে সেই উত্তর কারও জানা নেই।

এই যুদ্ধ আগামী কয়েকটি প্রজন্মের সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। একটা সময় হয়ত সেখানেও যুদ্ধের তীব্রতা কমবে, তখন প্রত্যাশিতভাবে এই যুদ্ধের খবর নিয়েও কেউ সেভাবে মাথা ঘামাবেন না। কিন্তু যারা ভুক্তভোগী তাঁরা জানেন কি চলছে সেখানে। এই আবহের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোন পেলেন প্যালেস্টাইন ভূখণ্ডের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তাঁকে ফোন করে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন মোদী। সদ্য গাজার আল-আহলি হাসপাতালে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রায় পাঁচশো জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে বহু শিশু, মহিলা ও বৃদ্ধ রয়েছে। এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মোদী। অভিযোগ উঠেছে সেখানে বোমার হামলা করেছে ইজরায়েল। যদিও তা অস্বীকার করেছে ইজরায়েল সরকার।

আমেরিকাও বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে এই ঘটনায় ইজরায়েল যুক্ত নয়। তাদের দাবি ফিলিস্তিন জঙ্গিরা সেই হামলা করেছে। এই ঘটনার পরই বৃহস্পতিবার এক্স হ্যান্ডলে মোদী লিখেছেন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজায় ভারত সাহায্য করবে। সে কথা তিনি জানিয়েছেন আব্বাসকে। ওই অঞ্চলের সন্ত্রাসবাদ ও হিংসার বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন তিনি।

প্রায় দু’সপ্তাহ হয়ে গেল যুদ্ধ চলছে মধ্যপ্রাচ্যে। যুদ্ধ শুরুর পর ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফোন করেছিলেন মোদীকে। সেখানে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন মোদী। এরপর যতদিন গিয়েছে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। ভয়াবহ যুদ্ধের জেরে থামানো যাচ্ছে না মৃত্যুমিছিল। তবে হাসপাতালে হামলার পর যেভাবে এত চিকিৎসাধীন রোগীর মৃত্যু হয়েছে তার নিন্দায় সরব হয়েছে সব মহল। তবে কী সেই জন্যেই ব্যালান্স কূটনীতির জন্য মোদী ফোন করেছেন আব্বাসকে?  

সমালোচনা এড়াতেই এই উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি? কারণ যুদ্ধে ইজরায়েলের পাশে প্রকাশ্যে দাঁড়িয়েছে নয়াদিল্লি। এক্ষেত্রে ভারত ও আমেরিকার অবস্থান এক বিন্দুতে মিলে গিয়েছে। কিন্তু যেভাবে গাজার উত্তর অংশে মৃত্যু মিছিল চলছে, বোমা বর্ষণে হাসপাতালে এত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সেখানে প্যালেস্টাইনের সঙ্গে কথা না বললে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ভারতের ভাবমূর্তি খারাপ হতো বলেই কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তবে কি সেই কারণেই ফোন করে ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী? সবমিলিয়ে আব্বাসকে প্রধানমন্ত্রীর ফোন করাটা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে যাই হোক না কেন, মধ্যপ্রাচ্যের এই যুদ্ধ থামানোর ব্যাপারে গোটা বিশ্ব একযোগে উদ্যোগ নিলে সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।‌ উল্লেখ্য পণবন্দিদের হামাস অবিলম্বে মুক্ত না করলে ইজরায়েল হামলা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে।

অন্যদিকে হামাসের দাবি হামলা বন্ধ হলেই তারা সবাইকে ছেড়ে দেবে। তাই এক পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে সমস্যা মেটানোর জন্য। সেই শুভ মুহূর্ত কখন আসে এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *