তাঁর মৃত্যুতে অগ্নিগর্ভ গোটা এলাকা! কে এই সইফুদ্দিন

তাঁর মৃত্যুতে অগ্নিগর্ভ গোটা এলাকা! কে এই সইফুদ্দিন

জয়নগর: কালীপূজোর ঠিক পরের দিনই বগটুই কাণ্ডের স্মৃতি ফিরে এসেছে বাংলায়। কারণ তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করের মৃত্যুতে অগ্নিগর্ভ অবস্থা দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানার বামনগাছিতে। সোমবার ভোর ৫টা নাগাদ মসজিদে নমাজ পড়তে যাচ্ছিলেন সইফুদ্দিন। সেই সময়ই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা৷ গুলি গিয়ে লাগে তাঁর কাঁধে৷ রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন তৃণমূল নেতা৷ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয় তাঁর৷ এই ঘটনার পরই জোর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। একের পর এক বাড়ি জ্বালানো হয়। কিন্তু এই তৃণমূল নেতা আদতে কে? কেনই বা এত উত্তেজনা ছড়াল তাঁর মৃত্যুতে?

জয়নগরের মহিষমারিতে জন্ম নেওয়া সইফুদ্দিন কর্মজীবনের শুরুতে বারুইপুর আদালতে মহুরির কাজ করতেন। সেই কাজের সূত্রেই স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে তাঁর ভালোই জানাশোনা হয়ে গিয়েছিল। তবে স্থানীয়দের দাবি, বিয়ের পরই নাকি তাঁর ‘ভাগ্য’ ফেরে। নিজের বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকতে শুরু করেছিলেন তিনি। তারপর ধীরে ধীরে কাজে উন্নতিও হয়। কিন্তু রাজনীতিতে চলে আসা পুরোটাই আকস্মিক বলে জানিয়েছেন তারা। যদিও পুরোপুরি রাজনীতিতে আসার আগে তিনি অন্য কাজও করেছেন। জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদল হতেই ধীরে ধীরে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেছিলেন সইফুদ্দিন। সেই সময়ে কিছুদিন মহুরির কাজ ছেড়ে জয়নগর থানায় ডাকমাস্টারের কাজ শুরু করেন। তখন থেকেই তাঁর প্রভাব এলাকায় বাড়তে শুরু করেছিল। 

এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সইফুদ্দিনকে। ২০১৮ সালে বামনগাছি অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি করা হয় সইফুদ্দিনকে। আর একই বছর পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট পান তাঁর স্ত্রী। ভোটে তিনি জিতেছিলেন এবং তারপরই স্ত্রী হন পঞ্চায়েত প্রধান। স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন, এরপরই গোটা পরিবারের চালচলন বদলে গিয়েছিল। এলাকায় তাদের প্রভাব আগের থেকে আরও বেড়েছিল। একটা সময় থেকে পরিস্থিতি এমন ছিল যে তাদের কথাতেই এলাকায় সব হত। ২০১৮ সালের পর থেকে এতদিন সস্ত্রীক সইফুদ্দিনের কার্যত ‘রাজত্ব’ চলেছে এলাকায়। চলতি বছর পঞ্চায়েত ভোটে তারা দুজনেই দাঁড়িয়েছিলেন এবং জেতেন। 

স্থানীয়দের দাবি, ইদানীং তৃণমূল নেতার রোজগারও ছিল দেখার মতো। লক্ষ লক্ষ টাকার নাকি লেনদেন হত তাঁর হাত ধরে। পুরোটাই নাকি ব্যবসায়িক টাকা। যদিও কীসের ব্যবসা ছিল তাঁর তা স্পষ্টভাবে কেউ বলতে পারেনি। তবে এটুকু জানা গিয়েছে, শেষ দিকে আর শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন না সইফুদ্দিন। নিজের ঝাঁ চকচকে বাড়ি বানিয়েছিলেন। পুলিশের অনুমান, ব্যবসায়িক কোনও শত্রুতার জেরেই এই খুন।   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *