বিতর্ক পিছু ছাড়েনি, তবু তিনি নিরুপম

তিয়াষা গুপ্ত: বাম আমলে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের `কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যত্’ – এই স্লোগান কার্যকর করতে অন্যতম ট্রাস্টেড সৈনিক ছিলেন তত্কালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন। রাজ্যের শিল্পনীতির পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন তিনি। রাজ্যের শিল্প ইতিহাসে লেখা থাকবে তাঁর নাম। বিতর্ক কোনোদিনই তাঁর পিছু ছাড়েনি। সাঁইবাড়ির কালো ছায়া সারা জীবন তাঁকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়িয়েছে। শিল্পের জন্য

বিতর্ক পিছু ছাড়েনি, তবু তিনি নিরুপম

তিয়াষা গুপ্ত: বাম আমলে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের `কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যত্’ – এই স্লোগান কার্যকর করতে অন্যতম ট্রাস্টেড সৈনিক ছিলেন তত্কালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন। রাজ্যের শিল্পনীতির পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন তিনি। রাজ্যের শিল্প ইতিহাসে লেখা থাকবে তাঁর নাম। বিতর্ক কোনোদিনই তাঁর পিছু ছাড়েনি। সাঁইবাড়ির কালো ছায়া সারা জীবন তাঁকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়িয়েছে। শিল্পের জন্য তবু তিনি নিরুপম।



(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

২০০১ সালে নিরুপম সেন বর্ধমান (দক্ষিণ) বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর বামফ্রন্ট সরকারের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০৬ সালেও তিনি ওই কেন্দ্র থেকেই পুননির্নির্বাচিত হন। এবারও তিনি শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের দায়িত্ব পান। শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি রাজ্যের শিল্পায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তাঁর সময়েই পশ্চিমবঙ্গ দেশের মধ্যে শিল্প বিনিয়োগ টেনে আনায় সামনের সারিতে উঠে আসে। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে টানা আলোচনার মাধ্যমে তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, ইস্পাত ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ আনতে তিনি সাফল্য দেখিয়েছিলেন।

সময়টা ২০০৬। বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক আসন জিতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। স্লোগান ওঠে কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যত। সেই স্লোগানের বাস্তব রূপকারের নাম নিরুপম। শপথ গ্রহণের দিনই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল, সিঙ্গুরে টাটাদের ন্যানো কারখানার ভিত তৈরি হবে। শুরু হয় উদ্যোগ। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে বাড়তে থাকে অসন্তোষ। কেউ আবার শিল্পের আশায় বুক বেঁধে জমিও দেন। শুরু হয় বিতর্ক, সিঙ্গুর আন্দোলন। এরপর নন্দীগ্রামেও অসন্তোষ বাড়ছিল। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ওপর চাপ বাড়ছিল। টাটাদের বিদায় অবশ্যই রাজ্যের শিল্প ইতিহাসে কালো অধ্যায়। কিন্তু সেসময় যে মানুষটি বারবার উন্নয়নের স্বার্থে ভারী শিল্পের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন, তাঁর নাম নিরুপম সেন।

বর্ধমানের সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডে তাঁর নাম জড়িয়েছিল। আমৃত্যু সাঁইবাড়ির কালো ছায়া তাঁর পিছু ছাড়েনি। যদিও বামেদের দাবি, মিথ্যা মামলায় তাঁকে ফঁসিয়েছিল তত্কালীন কংগ্রেস সরকার। তবে সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের কথা উঠলেই শিউড়ে উঠতে হয়। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে, মাকে ছেলেদের হত্যার পর তাঁদের রক্ত মাখানো ভাত খেতে বাধ্য করার ইতিহাস। এই রক্তাক্ত ইতিহাস সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হয়েছে নিরুপমকে। তাই শিল্প সংস্কারের গৌরবের মধ্যেই কোথাও চোরাগুপ্তা দীর্ঘশ্বাস ফেলবে সাঁইবাড়ি।

এই সংক্রান্ত আরও খবর জানতে ফেসবুক পেজ লাইক করুন facebook.com/Aajbikal ও aajbikel.com-এ ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × five =