এই স্মার্ট জুতো পায়ে গলালেই জানা যাবে ওই ব্যক্তির লোকেশন, নয়া আবিষ্কারে তাক লাগাল পড়ুয়া

এই স্মার্ট জুতো পায়ে গলালেই জানা যাবে ওই ব্যক্তির লোকেশন, নয়া আবিষ্কারে তাক লাগাল পড়ুয়া

 চুঁচুড়া: তার হাত ধরে যেন বদলে গেল জুতোর সংজ্ঞা। সময়ের নিরিখে যাকে ‘স্মার্ট জুতো’ বা ‘স্মার্ট শু’ বললে অত্যুক্তি হয় না৷ সামান্য উপকরণ আর অনুসন্ধানী মনের মেলবন্ধনে এক অসামান্য জুতো আবিষ্কার করে ফেলল নবম শ্রেণির পড়ুয়া। ভূতের রাজার দেওয়া জুতো পায়ে গলিয়ে নিমেষে পৌঁছে যাওয়া যেত যে কোনও জায়গায়। আর এই পড়ুয়ার তৈরি স্মার্ট শু জানিয়ে দেবে জুতো পরিহিত ব্যক্তির লোকেশন৷ অর্থাৎ এই জুতোকে ট্র্যাক করা যায়। আরও একটি বিশেষত্ব রয়েছে এই জুতোর৷ সেটা হল মোবাইল ফোন চার্জ করা ক্ষমাতা৷ পায়ে পায়েই তৈরি হবে বিদ্যুৎ, আর তা দিয়েই দিব্য পথে ঘাটে দেওয়া যাবে মোবাইলের চার্জ৷ 

চন্দননগর বারাসত দে পাড়ার বাসিন্দা সৌভিক কানাইলাল বিদ্যামন্দিরের মেধাবী ছাত্র৷ বয়স পনেরো  ছুঁইছুঁই৷ নেহাতই ছাপোষা ঘরের সন্তান। বাবা পেশায় জুটমিলের শ্রমিক। কিন্তু, তাঁর স্বপ্ন ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা৷ ছেলেও বাবার স্বপ্ন পূরণে মরিয়া৷ সৌভিকের পড়ার টেবিল যেন ছোটখাটো গবেষণাগার৷ সেখানে বসেই সে তৈরি করেছে এই আধুনিক জুতো। যা চমকে দিয়েছে চন্দননগরবাসীকে৷ তবে রাজ্য দেশের সীমা ছাড়িয়ে এই বিস্ময় বালকের কথা পৌঁছে গিয়েছে বিদেশেও। জাপানের একটি প্রযুক্তি সংস্থা  তার উদ্ভাবনের কথা শোনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে৷ 

এবারে স্কুলে বিজ্ঞান প্রদর্শনীতে রীতিমতো সাড়া ফেলেছিল সৌভিকের তৈরি স্মার্ট জুতো। এই জুতোর বিশেষত্ব হল, হাঁটলে পায়ের চাপে চাপে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। সেই বিদ্যুৎ দিয়ে অনায়াসে চার্জ করা যাবে মোবাইল ফোন। সৌভিকের কথায়, এই জুতো পায়ে গলিয়ে শুধু মোবাইল ফোন চার্জই নয়। ওয়াকিটকি এমনকী ড্রোনও চার্জ দেওয়া যাবে।

পায়ের পরিধানকে আধুনিক রূপ দিলেও, সৌভিকের নিজের পা বাঁধা আর্থিক সঙ্কটের বেড়িতে। জাপান যাওয়া তাঁর কাছে দুঃস্বপ্ন৷ দেশে থেকে আইআইটিতে পড়ার স্বপ্ন সফল হবে কি না তা নিয়েই সংশয়ে এই মেধাবী পড়ুয়া। তবে সেসব নিয়ে উদ্বেগে নয়, বরং নিজের ছোট্ট ঘরে নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কারেই মগ্ন থাকতেই ভালোবাসে সৌভিক। আলো-আধারিতে ভরা এক ফালি ঘরই, তার কাছে সব পেয়েছির দেশ। সেখানে বসে স্মার্ট হেলমেট তৈরির ‘সাধনা’ চালাচ্ছে সে৷