নতুন মেধা তালিকাতেও অসঙ্গতি! হাইকোর্টে মামলা, চাপে SSC

নতুন মেধা তালিকাতেও অসঙ্গতি! হাইকোর্টে মামলা, চাপে SSC

কলকাতা: রাজ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চাপ আরও বাড়ল। কারণ তাদের নতুন মেধা তালিকায় বিস্তর অসঙ্গতি ধরা পড়েছে! আর এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে নতুন মামলাও দায়ের হয়েছে। এসএসসি’র রিপোর্ট তলব করেছে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। গত ২৩ আগস্ট স্কুল সার্ভিস কমিশন নতুন প্যানেল প্রকাশ করেছিল নিয়োগের জন্য। কিন্তু সেই প্যানেলে চূড়ান্ত অসঙ্গতি আছে এই অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থী।  

গত ১৬ আগস্ট স্কুল সার্ভিস কমিশনকে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল যে, তারা নতুন যে প্যানেল তৈরি করেছে তার তালিকা প্রকাশ করবে। কিন্তু আদালতের অনুমতি ছাড়া নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে না স্কুল সার্ভিস কমিশন। শুধু তাই নয়, মামলাকারীদের অভিযোগ থাকলে তারা আদালতে সেই অভিযোগ সম্পর্কিত আবেদন করতে পারবে। আর এতেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়া আপাতত আটকে গিয়েছে। বুধবার বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা শুনানিতে ১৫০ জন চাকরিপ্রার্থীর পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানান, এই ১৫০ জন প্রথম মেধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু পরে তাদের সেই তালিকা থেকে কেন বাদ দিয়ে দেওয়া হল, তার কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি এসএসসি। 

এই ঘটনায় মামলাকারীদের অভিযোগ, অনেক তালিকাভুক্ত চাকরিপ্রার্থীদের আবেদন পত্র বিকৃত করা হয়েছে। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকের প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে এসএসসি সমস্ত প্রার্থীদের OMR শিটও প্রকাশ করেনি। তাই সেই মেধা তালিকা ত্রুটিপূর্ণ। এই কারণে প্রথম মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের অযোগ্য বলার নৈতিকতা নেই। বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অন্যান্য মামলাকারীদের লিখিত বক্তব্য আদালতে জমা দিতে হবে পাশাপাশি রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন ১৩ সেপ্টেম্বর তার উত্তর দেবে। ১৪ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি। 

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১ অক্টোবর ২০১৯ সালে প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ করে রাজ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশন। কিছু অকৃতকার্য পরীক্ষার্থী সেই তালিকা চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ১১ ডিসেম্বর ২০২০ সালে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য এসএসসির মেধা তালিকা বাতিল করে দেন এবং প্রার্থীদের তথ্য আপলোড করে সমস্ত তথ্য প্রকাশ করতে নির্দেশ দেন এবং নতুন করে ইন্টারভিউর পাশাপাশি মেধা তালিকা প্রকাশ করতে বলেন। তবে পরে যে মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয় তাতে যারা প্রথম মেধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল তাদের নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

এই মামলা পরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে গেলে তিনি নির্দেশ দেন, মামলাকারীদের ব্যক্তিগত অভিযোগ তারা স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে জানাতে পারবে। কিন্তু পরবর্তীকালে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ১৫০ জন মামলাকারী। যদিও কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ মামলার শুনানির শেষে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ বহাল রাখেন। তবে স্কুল সার্ভিস কমিশন মামলাকারীদের অভিযোগ খতিয়ে না দেখেই গড়পত্তা নির্দেশ দেয় এবং জানায় মামলাকারীদের কোনও যোগ্যতাই নেই। এসএসসির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, স্বচ্ছ ভাবে তৈরি করেনি তারা। তালিকাভুক্ত অনেক চাকরি প্রার্থী তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র বিকৃত করা হয়েছে, শুধু তাই নয় অনেকের নম্বর বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *