বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সমর্থনে আলোচনা সভা’! পোস্টার পড়ল হাই কোর্ট চত্বরে

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সমর্থনে আলোচনা সভা’! পোস্টার পড়ল হাই কোর্ট চত্বরে

কলকাতা:  স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর একাধিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ তদন্তের স্বার্থে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী  পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআই-এর কাছে হাজিরার নির্দেশ দেন তিনি৷ দুর্নীতির শিকড়ে পৌঁছতে তাঁর এই সকল নির্দেশ মেনে নিতে পারেননি অনেকেই৷ প্রতিবাদে তাঁর এজলাস বয়কট হয়েছে৷ তবে অবস্থান বদল হয়নি বিচারপতির৷ তিনি দৃঢ় কন্ঠে বলেছেন, ‘‘আপনারা রাজনীতি করছেন করুন। কিন্তু আমি রাজনীতি করছি না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আদালত বিচার করছে। তাহলে সমস্যা কোথায়?’’ এবার তাঁকেই সমর্থন করে খোদ হাইকোর্টে পড়ল পোস্টার৷

আরও পড়ুন- আনিসের বাবা ক্ষমা না চাইলে দায়িত্ব থেকে সরবেন বিচারপতি! কী ঘটনা

সাম্প্রতিক ঘটনাক্রমে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ এবার তাঁর সমর্থনে আলোচনা সভার আয়োজন করল ফোরাম ফর লিগাল অ্যান্ড ডেমোক্রেটিক রাইটস৷ সংগঠনের তরফে হাই কোর্ট চত্বরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সমর্থনে পোস্টারও লাগানো হয়েছে৷ মঙ্গলবার দুপুরে ভারত সভা হলে আলোচনার আয়োজন করা হয়েছিল৷ বলাবাহুল্য হাইকোর্ট চত্বরে এমন পোস্টার এই প্রথম। সম্প্রতি আইনজীবীদের একাংশ যে ভাবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস বয়কট করেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই আলোচনা সভা বলে অনেকেই মনে করছেন৷  

গত বুধবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কোর্ট বয়কট করেন তৃণমূলের আইনজীবী সেলের সদস্যরা। কোর্টের বাইরে তুমুল হই হট্টোগোল শুরু করেন তাঁরা৷ এই অচলাবস্থার মধ্যেই সোমবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নিজে বলেন, ‘‘সবাই চলে আসুন। মামলার কাজ এগোচ্ছে না। মানুষকে স্বস্তি দেওয়া যাচ্ছে না।’’ পাশাপাশি বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক-সহ বেশ কয়েক জন আইনজীবীকে নিজের এজলাসে ডেকেও পাঠান তিনি৷ তাঁর পরামর্শ, ‘‘সাধারণ সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নিন৷ কারও সঙ্গে তো আমার ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই।’’

বিভিন্ন মামলায় বিচারতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ জনমননে সাড়া ফেলেছে৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর সমর্থনে সরব হয়েছে সাধারণের একাংশ৷ দুর্নীতির শিকড় উপড়ে ফেলতে তিনি যে পদক্ষেপ করেছেন, তাঁকে স্বাগত জানিয়েছে নেটিজেনরা৷ এর আগে তাঁর এজলাস ঘেরাওয়ের ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি বলেছিলেন, “মাথায় বন্দুক ধরতে পারেন। মারতে পারেন। মরতে রাজি আছি। কিন্তু দুর্নীতি দেখলে চুপ করে থাকব না। আওয়াজ তুলবই।”  

যদিও আইনজীবীদের রাজ্য বার কাউন্সিলের একাংশের দাবি, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ইচ্ছাকৃতভাবে সরকারের নিন্দা করছেন৷ তিনি প্রতিশোধমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। তাঁদের মতে, একজন বিচারপতির কাছে এরকম আচরণ কাম্য নয়৷ এমনকী কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে স্মারকলিপিও জমা দেয় বার কাউন্সিল। তবে তাঁদের এই আচরণের সমালোচনায় সরব আইনজীবীদের একাংশ৷ তারই প্রতিফলন দেখা গেল কোর্ট চত্বরে লাগানো পোস্টারে।  বিচারপতির সমর্থনে করা হল আলোচনা সভা৷