ক্ষতিপূরণ কেন দেবে না রেল? তদন্ত কমিটি গড়ে দায় এড়ানোর কৌশল মেট্রোর?

কলকাতা: পাতাল পথে মেট্রো বিপর্যয়ের কারণ জানিয়ে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া নির্দেশ রেল কর্তৃপক্ষের৷ বুধবার সন্ধ্যায় দুর্ঘটনা কারণ খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু, দুর্ঘটনার ১৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষতিপূরণ ঘোষণা না হওয়ায় মেট্রো রেলের ভূমিকা নিয়ে সবর হয়েছেন যাত্রীদের একাংশ৷

ক্ষতিপূরণ কেন দেবে না রেল? তদন্ত কমিটি গড়ে দায় এড়ানোর কৌশল মেট্রোর?

কলকাতা: পাতাল পথে মেট্রো বিপর্যয়ের কারণ জানিয়ে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া নির্দেশ রেল কর্তৃপক্ষের৷ বুধবার সন্ধ্যায় দুর্ঘটনা কারণ খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু, দুর্ঘটনার ১৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষতিপূরণ ঘোষণা না হওয়ায় মেট্রো রেলের ভূমিকা নিয়ে সবর হয়েছেন যাত্রীদের একাংশ৷ শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় ৪২ জন যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লেও এখনও এসএসকএমে ভর্তি চার যাত্রী৷ অভিযোগ, অসুস্থ যাত্রীদের খোঁজ-খবর নেওয়া তো দূর, অসুস্থ হওয়া প্রতি সমবেদনা জানাতেও ভুলে গিয়েছেন মেট্রো রেলের কর্তারা৷ শুধুমাত্র উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়েই গোটা ঘটনার দায় এড়াতে মেট্রো কর্তৃপক্ষ মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ৷ দুর্ঘটনার পর আদৌ বাড়বে যাত্রী সুরক্ষা? মিলবে ঠিকঠাক পরিষেবা? প্রশ্ন যাত্রীদের একাংশের৷

জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ আগুন লাগে দমদমগামী মেট্রোয়। ট্রেনটি তখন রবীন্দ্র সদন আর ময়দান স্টেশনের মাঝে সুড়ঙ্গে ছিল। মুহূর্তের মধ্যে ধোঁয়ায় ভরে যায় মেট্রোর রেক। এসি কোচ হওয়ায় ভেন্টিলেশনের কোনও ব্যবস্থা ছিল না৷ ফলে দমবন্ধ হয়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ আতঙ্কের চোটে ভিড়ে ঠাসা মেট্রোয় ছোটাছুটি শুরু করে দেন অনেকে। এই ঘটনায় প্রাণহানি না হলেও, মেট্রোর পরিষেবা ও আপৎকালীন ব্যবস্থা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে কার্যত ছেলেখেলার অভিযোগ উঠেছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অসুস্থ ৪২ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ প্রাথমিক চিকিৎসার পর বেশির ভাগ যাত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হয়৷ এখনও পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি চার যাত্রী৷

এ দিন মেট্রোর লাইন ধরে হাঁটিয়ে যাত্রীদের ময়দান স্টেশন পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়। আতঙ্কে অনেকেই কাঁদতে কাঁদতে স্টেশন থেকে বেরিয়ে আসেন। ঘটনার জেরে মেট্রো চলাচল ব্যাহত হওয়ায় বাদুড়ঝোলা অবস্থা হয় বাসের। কলকাতা ও লাগোয়া শহরতলিতে অফিস ফেরত যাত্রীদের নাকানিচোবানি খেতে হয়। ঘটনাস্থলে ছুটে যান কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার, দমকলের ডিজি জগমোহন। মেট্রোর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে সুজিত বলেন, ‘‘গাফিলতি থাকলে খতিয়ে দেখা হবে। মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে ছেলেখেলা করা যাবে না৷’’ মেয়রের বক্তব্য, ‘‘যাত্রীদের দাবি, মেট্রো রেল দ্রুত ব্যবস্থা নেয়নি৷’’ জগমোহন জানান, রেকের যেখান থেকে পাওয়ার সাপ্লাই হয়, সেখানে আগুনের ফুলকি বের হতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় বড় ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গিয়েছে৷

মেট্রোর বিরুদ্ধে যাত্রীদের মূল অভিযোগ, ঘটনা ঘটার অন্তত চল্লিশ মিনিট ধরে তাঁরা অন্ধকার রেকের মধ্যে আটকে ছিলেন। উদ্ধারকারী দল অনেক পরে ঘটনাস্থলে আসে। যাত্রীদের বক্তব্য, সেই সময় আতঙ্ক কাটাতে কোনও রকম ঘোষণাও করা হয়নি। উপায়ান্তর না দেখে এসি রেকের কাচের জানলা ভাঙতে শুরু করেন। তাতেও হাত-পা কেটে রক্তাক্ত হন অনেকে। উদ্ধারের পর জল, অ্যাম্বুল্যান্স, স্ট্রেচারের ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা৷ মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে প্রমাণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন যে, এই ঘটনায় কোনও প্রাণহানি ঘটেনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − fifteen =