কংগ্রেসে থাকতে না পেরে সত্যিই কী বিজেপিতে যাবেন কৌস্তভ? মিলছে এ কোন ইঙ্গিত?

কংগ্রেসে থাকতে না পেরে সত্যিই কী বিজেপিতে যাবেন কৌস্তভ? মিলছে এ কোন ইঙ্গিত?

kaustav bagchi

কলকাতা: বহু ঘটা করে গঠিত হয়েছে বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোট। আর তাতেই কী রাজ্য কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ লেখা হয়ে গিয়েছে? অন্তত রাজ্য কংগ্রেসের সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট তেমন ইঙ্গিতই দিচ্ছে। রাজ্য কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা কৌস্তভ বাগচী দলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন, এই জল্পনা এখন তুঙ্গে। সদ্য বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রশংসা শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। সেই সঙ্গে কৌস্তভ বলেছেন এমন একটি বিরোধী মঞ্চের প্রয়োজন, যারা আন্দোলন করে তৃণমূলকে রাজ্য থেকে উৎখাত করতে পারবে।

কৌস্তুভের মুখে একটা কথাই বারবার শোনা যাচ্ছে, তা হল তৃণমূলকে উৎখাত করা। এটাই তাঁর ওয়ান পয়েন্ট অ্যাজেন্ডা হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, তবে কী সত্যিই বিজেপিতে যাবেন কৌস্তভ? এতদিন কৌস্তভ গলা ফাটিয়ে অভিযোগ করে গিয়েছেন যে, বিজেপি হচ্ছে মহাত্মা গান্ধীর  হত্যাকারী নাথুরাম গডসের মতাদর্শ মেনে চলা একটি দল। কৌস্তুভের পাশাপাশি রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতারাও এই অভিযোগ নিয়মিত করে থাকেন। সেক্ষেত্রে ধর্মীয় মতাদর্শের বিরুদ্ধে থাকা একটি দলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নাম লেখাবেন কৌস্তভ? সত্যিই কি এমনটা ঘটতে চলেছে? যদিও কৌস্তভের স্পষ্ট কথা, তিনি এখনই দল ছাড়ার কথা ভাবছেন না।

তবে কৌস্তুভ যে দাবিই করুন না কেন, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু হয় না। কথায় বলে রাজনীতি হচ্ছে সম্ভাবনার শিল্প। তাই সেখানে সব কিছু ঘটতে পারে। আর এই ধরনের ঘটনা গত এক দশক ধরে বারবার প্রত্যক্ষ করেছে রাজ্যবাসী। দল ছেড়ে অন্য দলে গিয়ে আবার পুরনো দলে ফিরে এসেছেন, বা অন্য দলেই রয়ে গিয়েছেন, এ আজ রাজ্য রাজনীতিতে নতুন কোনও ঘটনা নয়। তাই কৌস্তভ কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে গেলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তবে প্রশ্ন উঠে যাবে কংগ্রেসের এই আইনজীবী নেতার ইডিওলজি নিয়ে।

ঘটনা হল তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে আন্দোলনকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত রাজ্যে বিরোধী দলনেতার পদে ছিলেন কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান। কিন্তু সেই সময় কালে মান্নান এমন একটিও আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেননি, যাতে তৃণমূলকে বিপাকে ফেলা যায়। যে ধারাবাহিক আন্দোলন বিরোধী দলনেতার কাছ থেকে রাজনৈতিক মহল প্রত্যাশা করে, তার ছিটেফোঁটাও দেখাতে পারেননি মান্নান। সুদীর্ঘ বাম আমলে বিরোধী নেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকার কথা আজ ইতিহাস হয়ে গিয়েছে। সেই সময় মমতার আন্দোলন সাড়া ফেলে দেয় রাজ্য জুড়ে। বলতে দ্বিধা নেই তার কিছুটা হলেও শুভেন্দুর মধ্যে এখন দেখা যাচ্ছে।

আর শুভেন্দুর সেই ভূমিকার কথাই তুলে ধরেছেন কৌস্তভ। তার ভিত্তিতেই বিষয়টিকে সবাই দু’য়ে দু’য়ে চার করতে চাইছেন। কারণ কৌস্তভের মধ্যেও শুভেন্দুর মতো একটা প্রতিবাদী সত্তা রয়েছে। তিনিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবল বিরোধী হিসেবে ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতিতে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। তৃণমূল বিরোধী তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশ কিছুদিন ধরেই কৌস্তভের একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। সবমিলিয়ে শুভেন্দু-কৌস্তভ আগামী দিনে হাতে হাত মিলিয়ে তৃণমূল বিরোধী আন্দোলন করছেন, এমন ছবি দেখা গেলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 5 =