মুহুরত ট্রেডিং: শুভ ও অশুভ! অবশ্যই জানা জরুরি…

মুহুরত ট্রেডিং: শুভ ও অশুভ! অবশ্যই জানা জরুরি…

কলকাতা: আর কিছু সময়ের মধ্যেই শুরু হতে চলেছে এবছরের মুহুরত ট্রেডিং৷ ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস, এই বিশেষ সময়ে ব্যবসা শুরু করলে, সারাবছর সেই ব্যবসা লাভজনক হয়৷ তবে, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ শুভ সময়ের উপর ভিত্তি করে হয় না৷ প্রয়োজন গবেষণা এবং পরিসংখ্যান৷  সেই পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই উৎসবে বেশ কিছু সেক্টর ভাল ফলাফল করতে পারে পরবর্তী ত্রৈমাসিকে৷ এ বছর ১২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬:১৫ থেকে শুরু হতে চলেছে মুহুরত ট্রেডিং৷ আজ বাজার খোলা থাকবে সন্ধ্যা ৭:১৫ পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে আপনি যদি শেয়ার কেনার কথা ভাবনা, অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে কিছু বিষয়। জেনেনিন, মুহুরত ট্রেডিংয়ের গত ১৪ বছরের ইতিহাস!

গবেষণা:  মুহুরত ট্রেডিং করার আগে, অবশ্যই স্টক নিয়ে পড়াশোনা করা খুবই জরুরি। গাড়ি চালানোর আগে ড্রাইভিং যেমন জরুরি, তেমনই ট্রেড করার আগে স্টক নিয়ে পড়াশোনা করাও জরুরি। প্রাথমিকভাবে আপনি যে স্টক কিনতে চাইছেন, তার একটি তৈরি করতে পারেন৷ তালিকা তৈরির পর, ওই তালিকা অনুযায়ী স্টকগুলি সম্পর্কে বিশদে গবেষণা করতে পারেন। ট্রেডিং পর্বে অল্প সময়ের মধ্যে প্রচুর লাভের আশা করা ঠিক নয়। বাস্তবে বিপুল লাভ হওয়াও সম্ভব নয়। কারণ, মুহুরত ট্রেডিং   মাত্র এক ঘণ্টার হয়ে থাকে। এই এক ঘণ্টার মধ্যে চার্ট প্যাটার্ন বোঝা খুবই চ্যালেঞ্জের৷   

বিশ্বাস ও অতিরিক্ত লাভ: আসলে, মুহুরত ট্রেডিং মূলক একটি প্রতীকী ইভেন্ট৷ ব্যবসায়ীদের বড় অংশ বিশ্বাস করে থাকেন, এই বিশেষ সময়ে ব্যবসা শুরু করলে বা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করলে, সেই ব্যবসা সারা বছর লাভজনক হয়ে থাকে৷ তবে, এই শুভ মুহূর্তে শেয়ার কেনাবেচার আগে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে৷ কারণ, মাত্র ১ ঘণ্টার মধ্যে বাজার থেকে অতিরিক্ত লাভের আশায় ভুল শেয়ারে কখনই বিনিয়োগ করবেন না৷ বাস্তবসম্মত লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা জরুরি৷ সেই লক্ষ্যমাত্র অনুযায়ী কেনাবেচা করাই সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷

জরুরি বিষয়: একটি নির্দিষ্ট সেক্টরে একাধিক শেয়ার না কেনাই ভাল৷ বরং বিভিন্ন সেক্টরে শেয়ার কেনা থাকলে ঝুঁকি খানিকটা রক্ষা করা যায়৷ দীপাবলি, বড়দিনের পরই আসবে নির্বাচন৷ ফলে, বিনিয়োগের আগে নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট মাথায় রাখা প্রযোজন৷ এক্ষেত্রে গাড়ি শিল্প ও এফএমসিজি সেক্টর বিনিয়োগকারীদের পাথির চোখ হতে পারে৷ বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগ করে প্রোফাইল বিভাজন করা সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে৷ তাতে বিনিয়োগে ঝুঁকি কমবে৷ স্থিতিশীল উপার্জনের সম্ভাবনাও বাড়বে৷

ইতিহাস: ২০০৮ সাল থেকে ধরলে মোট এখনও পর্যন্ত মোট ১৫টি মুহুরত ট্রেডিং পেয়েছে বাজার৷ এই ১৫টি মুহুরত ট্রেডিংয়ের মধ্যে মাত্র তিন বছর ক্ষতির মুখে পড়েছিল বাজার৷ বাকি সব সময়ে ট্রেডিং সূচক ০.৫ থেকে ১ শতাংশ বেড়েছে৷ পরিসংখ্যান বলছে, সবচেয়ে লাভজনক বছর ছিল ২০০৮ সাল৷ ওই বছর সূচক বেড়েছিল প্রায় ৬ শতাংশের কাছাকাছি৷ প্রচুর মুনাফাও হয়েছিল ওই বছর৷ গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে মুহুরত ট্রেডিংয়ে সূচক বেড়েছিল ০.৮৮ শতাংশ৷ ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল, এই ১৪ বছরে মুহুরত ট্রেডিংয়ের সূচক ১ শতাংশের নিচেই ছিল৷

এবছর, শুরুতেই বাজার উপরের দিকে (গ্যাপআপ ওপেনিং) থাকার অনুমান করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা৷

আবেগে ক্ষতি: মুহুরত ট্রেডিংয়ের সময় শেয়ার কেনাবেচার ক্ষেত্রে অনেক ব্যবসায়ী আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন৷ কিন্তু শেয়ার বাজারে আবেগ সবসময়ই ক্ষতি ডেকে আনে৷ শুভ সময় ভেবে, আবেগের বশে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নেবেন না৷ অলাভজনক শেয়ারে বিনিয়োগ করবেন না৷ তাই মুহুরত ট্রেডিংয়ের শেয়ার কেনাবেচার সময় আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরি৷

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: আসলে, বাজারে বিনিয়োগ কোনও শুভ সময় দেখে হয় না৷ বাজারে বিনিয়োগ হয় টেকনিক্যাল, ফান্ডামেন্টাল এবং ঝুঁকির দিক বিবেচনা করেই সঠিক দিশায় এগিয়ে চলুন৷ অবশ্যই লাভবান হবেন৷ শুভ মুহূর্তে এই ট্রেডিং করার আগে প্রয়োজনে স্টক মার্কেট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিন৷ এছাড়াও  ট্রেডিং স্কিল বাড়াতে যুক্ত হতে পারেন PREMIUM Options Calls – Nifty & Bank Nifty Calls – Index Options Trading— এই টেলিগ্রাম চ্যানেলে৷ https://t.me/NiftyBankNiftyIndexOptionsCalls

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *