ভারতের জার্সিতে আবেগে ঝুলন, শেষ ম্যাচকে স্মরনীয় করতে লর্ডসকে তুলে আনা হচ্ছে কলকাতায়

ভারতের জার্সিতে আবেগে ঝুলন, শেষ ম্যাচকে স্মরনীয় করতে লর্ডসকে তুলে আনা হচ্ছে কলকাতায়

কলকাতা:  ঝুলন গোস্বামী৷ ভারতের মহিলা ক্রিকেট দলের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র৷ শনিবার লন্ডনের লর্ডসে জীবনের শেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে নামছেন ‘চাকদা এক্সপ্রেস’। পুজোর আগে তাই মন খারাপ বাঙালি ক্রিকেটপ্রেমীদের৷ আয়োজক ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চলতি সিরিজের তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচ খেলেই অবসর নেবেন ঝুলন। দীর্ঘ ক্রিকেট জীবনে তিনি অনেক কিছু পেয়েছেন৷ কিন্তু দু’বার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেও ট্রফি না জেতার আক্ষেপ হয়তো থেকেই যাবে৷ তবে ভারতের জার্সি গায়ে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মুহূর্ত তাঁর কাছে সেরা হয়ে থাকবে৷ 

আরও পড়ুন- ‘কোনও মতে কেটে গেল ২৪টা বছর, তাই না? টেনিসকে বিদায় জানিয়ে চোখে জল ‘রাজা’র

ঝুলনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ারের শেষ ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখতে উদ্যোগী হয়েছে বাংলার ক্রিকেট বোর্ড সিএবি। ভারতীয় সময় শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ শুরু হয় ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ৷ এই ম্যাচ আইনক্স ফোরামে বড় পর্দায় দেখানোর বন্দোবস্ত করা হয়েছে৷ প্রথম দু’টি ম্যাচ জিতে হরমনপ্রীত কউরের ভারত ইতিমধ্যেই তিন ম্যাচের সিরিজ ঝুলিতে পুরে নিয়েছে। শনিবার নিয়মরক্ষার ম্যাচ। তবে এই ম্যাচ স্পেশ্যাল হয়ে উঠেছে ঝুলনের জন্যেই৷ বুধবার দ্বিতীয় এক দিনের ম্যাচে জেতার পরে মহিলা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হরমনপ্রীত বলেছিলেন, “লর্ডসের ম্যাচের সঙ্গে আমাদের বিশেষ অনুভূতি জড়িয়ে থাকবে৷ ওটাই ঝুলনদির শেষ ম্যাচ। কোনও রকম চাপ ছাড়াই আমরা গোটা ম্যাচটা উপভোগ করতে চাই।’’ 

মাত্র ১৯ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ঝুলনের৷ সেই সময় জোর বল করাটাই ছিল তাঁর লক্ষ্য৷ চাইতেন উইকেট শিকার করতে৷ কিন্তু, কখনও ভাবেননি এত দীর্ঘ হবে তাঁর কেরিয়ার৷ তবে তাঁর কাছে সেরা প্রাপ্তি ভারতীয় জার্সি গায়ে ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে মাঠের মাঝখানে গিয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়া৷ তাঁর কথায়, এটাই আমার কেরিয়ারের সবথেকে গর্বের মুহূর্ত হিসেবে থেকে যাবে। কিন্তু, অবসর পরবর্তী জীবন নিয়ে কী ভাবছেন চাকদা এক্সপ্রেস? 

শেষ ম্যাচে নামর আগে ঝুলন বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে আমি এই বিষয়টা নিয়ে কিছু ভাবিইনি। এখন আমি শুধুমাত্র লর্ডসের ম্যাচের উপরেই মনসংযোগ করছি৷ সেখানে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে চাইছি। কিন্তু আমি যেটাই করি না কেন, আপনাদের সাহায্য লাগবে। পরে আলোচনা করা যাবে।’ 

কলকাতা ময়দানে সবার প্রিয় ‘ঝুলু’র ২০ বছরের  দীর্ঘ কেরিয়ারের আজ শেষ দিন।  নদীয়ার চাকদা থেকে যে লড়াইটা শুরু করেছিলেন ঝুলন, তাঁর ইতি পড়তে চলেছে লর্ডসে। মনে অদম্য জেদ আর প্রবল ইচ্ছেশক্তি তাঁকে করে তুলেছিল অপ্রতিরোধ্য। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিংবদন্তি তকমা পেয়েছেন তিনি। সব ফরম্যাট মিলিয়ে ৩৫২ উইকেটের মালকিন চাকদা এক্সপ্রেস। ডায়ানা এদুলজির পর দ্বিতীয় মহিলা ক্রিকেটার হিসেবে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন বাংলার মেয়ে ঝুলন। যিনি কিনা, মহিলা ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী। সাফল্যের ঝুলি পূর্ণ করেই ক্রিকেটকে আলবিদা জানাচ্ছেন ঝুলন৷