অনলাইন ঋণে বিপদ! অবশেষে হস্তক্ষেপ আদালতের

অনলাইন ঋণে বিপদ! অবশেষে হস্তক্ষেপ আদালতের

নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাসের প্রকোপে লকডাউন কালে গৃহবন্দী হয়েছিলেন মানুষ। তারপর থেকে সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলার ‘নিউ নর্মাল’ যেন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চেনা ছন্দকেই দিয়েছে এলোমেলো করে। ফলে নানা ক্ষেত্রেই ব্যাপক হারে বেড়েছে অনলাইন মাধ্যমের চাহিদা। সেই সূত্রেই অনলাইন ব্যাঙ্কিং মাধ্যমে তৈরি হওয়া কিছু বিতর্কে এবার হস্তক্ষেপ করল আদালত।

করোনা কালে ইদানিং অনলাইন লোন নেওয়ার ব্যাপক চল শুরু হয়েছে। বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে চড়া সুদে স্বল্পকালীন মেয়াদের জন্য দেওয়া হচ্ছে লোন। এদিন একটি মামলার শুনানি সূত্রে এই অনলাইন ঋণ সংক্রান্ত বিষয়ে মতামত চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (RBI)-র কাছে আবেদন জানাল দিল্লি হাইকোর্ট। অনলাইন লোন বিষয়ক একটি জনস্বার্থ মামলার সূত্রেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিন দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি. এন. প্যাটেল এবং বিচারপতি জ্যোতি সিংয়ের ডিভিশন বেঞ্চের তরফ থেকে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক এবং ব্যাঙ্কিং নিয়ন্ত্রকের উদ্দেশ্যে এই জনস্বার্থ মামলা বিষয়ে তাঁদের মতামত স্পষ্ট করার আর্জি জানিয়ে একটি নোটিশ জারি করা হয়েছে। ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে এই ধরণের অনলাইন ঋণদানকারী সংস্থাগুলি অত্যন্ত চড়া হারে সুদ দাবি করে।

সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গেছে, অনলাইন ঋণদানকারী সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন ধরণিধর কারিমোজ্জি। তিনি তেলেঙ্গানার বাসিন্দা। নিজের মামলায় তিনি জানিয়েছেন, দেশ জুড়ে ৩০০-র বেশি মোবাইল অ্যাপ রয়েছে যারা তাৎক্ষণিক ভিত্তিতে প্রায় ১৫০০ থেকে ৩০০০০টাকা পর্যন্ত লোন দিয়ে থাকে। এই সমস্ত লোনের মেয়াদ থাকে মাত্র ৭ থেকে ১৫ দিন।

জানা গেছে, এই সমস্ত ঋণদানকারী সংস্থা তাদের দেওয়া লোনের উপর অন্তত ৩৫% থেকে ৪৫% পর্যন্ত টাকা নানা খাতে কেটে নেয়। প্ল্যাটফর্ম চার্জ, সার্ভিস চার্জ, প্রসেসিং চার্জ ইত্যাদি কেটে নেওয়ার পর যা পড়ে থাকে তাই ঋণ গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। শুধু তাই নয়, ঋণ শোধের জন্য নির্ধারিত সময়ের পর একদিন অতিক্রান্ত হলেই গ্রাহকদের ফোন করে হয়রান করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। উল্লেখ্য, অনলাইন লোনের এই সমস্ত সংস্থাগুলিকে নিয়ে ইতিবাচক ভাবনা চিন্তাই করছিল ব্যাঙ্কিং নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ। দুদিন আগেই এগুলিকে যথাযথ পরিকাঠামো প্রদান করে প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরির কথাও ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তার মাঝেই অনলাইনে লোন প্রদানকারী সংস্থাগুলির কর্মপদ্ধতির বিরুদ্ধে মামলা করা হল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *