ছেঁড়া-ফাটা জিন্স বিকোল ৭২ লক্ষ টাকায়? রহস্য কী?

ছেঁড়া-ফাটা জিন্স বিকোল ৭২ লক্ষ টাকায়? রহস্য কী?

নয়াদিল্লি:  পুরনো ছেঁড়া-ফাটা জিন্স এখন ট্রেন্ড৷ হালফিলের ছেলে-মেয়েদের কাছে এহেন জিন্স খুবই পছন্দের৷ কিন্তু কখনও শুনেছেন কি লক্ষ লক্ষ টাকায় বিকোচ্ছে ডেনিমের পুরনো প্যান্ট! শুধু পুরনোই নয়, একেবারে ময়লা ও ছেঁড়া-ফাটা৷ কী এমন আছে ওই প্যান্টে? কেনই বা এত দাম? এটি কি কোনও সেলিব্রিটির ব্যবহার করা? নাকি এর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে কোনও বহু মূল্যের জিনিস? প্রশ্ন অনেক৷ 

আরও পড়ুন- কেরামতি! ১০ হাজার ফুট উঁচুতে বিমান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পিৎজায় কামড় তরুণীর! দোলাচ্ছেন কোমরও

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় জোড় চর্চা শরু হয়েছে লিভাইস কোম্পানির একটি প্যান্ট নিয়ে৷ যেটি আমেরিকায় নিলামে তোলা হয়েছিল। তাতে প্যান্টটির যা দাম উঠল, তা শুনে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়৷ ভারতীয় টাকায় এর মূল্য প্রায় ৬২ লক্ষ টাকা। তবে সব মিলিয়ে ক্রেতাকে গুণতে হবে প্রায় ৭২ লক্ষের কাছাকাছি। মরা হাতি লাখ টাকা দাম, সকলেরই জানা৷ তা বলে পুরনো জিন্সের দাম ৭২ লক্ষ?

সকলের মনে এখন একটাই প্রশ্ন, কেন প্যান্টটির এত দাম? কারণ, এটি এখনও পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে পুরনো জিন্সের প্যান্টগুলির মধ্যে এটি একটি।  এটি ডেনিম প্রস্তুতকারক আন্তর্জাতিক কোম্পানি লিভাইসের তৈরি সবচেয়ে পুরনো জিন্সগুলির অন্যতম৷ 

এই জিন্সটির বয়স কত? এর বয়স শুনলে হয়তো অনেকেই চমকে যাবেন। এই প্যান্টটি বানানো হয়েছিল ১৮৮০ সাল নাগাদ৷ ডেনিমের ইতিহাস-চর্চাবিদ মাইকেল হ্যারিস জানান,  এখনও পর্যন্ত যত পুরনো জিন্স উদ্ধার হয়েছে,  তার মধ্যে এই প্যান্টটিই সবচেয়ে প্রাচীন। এটি লিভাইসের একেবারে গোড়ার দিকে তৈরি করা প্যান্ট। সেই সময় কোমরে ফাঁস দেওয়া জিন্স বিক্রি করত লিভাইস। এটি তেমনই একটি জিন্স।

এই জিন্সটি নিলামে উঠলে তা কিনে নেন কাইলে হুপার্ট নামের এক জনৈক ব্যক্তি৷ তাঁর সম্ভারে এহেন ভিনটেজ বহু পোশাকই রয়েছে। নানা দেশে তিনি এই জাতীয় জামাকাপড় পাঠিয়েও থাকেন। হুপার্ট জানান, এটি তাঁর সংগ্রহের অন্যতম একটি নিদর্শন হয়ে থাকবে। কারণ, তাঁর সংগ্রহে এত প্রাচীন আর কিছুই নেই। 

কিন্তু এতদিন কোথায় ছিল এই প্যান্টটি? কে ব্যবহার করেছিলেন? এর ইতিহাসই বা কী? 

মাইকেল হ্যারিস জানান, কয়েক বছর আগে একটি পরিত্যক্ত খনিতে এই জিন্সটির দেখা মেলে৷ বহু বছর আগেই আমেরিকার ওই খনিটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় খনি শ্রমিকদের জন্য শক্ত জিন্সের প্যান্ট বানানো হত। কারণ খনির ভিতর কঠিন পরিশ্রম করতে হত শ্রমিকদের৷ পাতলা প্যান্ট বেশি দিন টিকত না৷ সেই কারণেই মোটা জিন্সের প্যান্টের প্রচলন শুরু৷ আমেরিকার জামাকাপড়ের ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়৷ 

সেই সঙ্গে আমেরিকার ইতিহাসে অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়ের দলিল এই জিন্স৷ এর পকেটের ভিতরের দিক ছাপা রয়েছে ‘দি অনলি কাইন্ড মেড বাই হোয়াইট লেবার’। ১৮৮২ সালে চিনা শ্রমিক বর্জন আইন চালু হওয়ার সময়ে এই ‘স্লোগান’ চালু ছিল৷ পরে অবশ্য তা তুলে নেওয়া হয়।