চাকরি কোথায়, সংরক্ষণ দিয়ে কী হবে? উত্তাল রাজ্যসভা

তিয়াষা গুপ্ত: বর্ধিত রাজ্যসভার অধিবেশনে কোটা বিল ও তিন তালাক বিল পাশ করাতে এদিন মরিয়া হয়ে ওঠে সরকার। এই নিয়ে দিনভর সংসদের উচ্চকক্ষে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়। এদিন রাজ্যসভায় কোটা বিল ও নাগরিক সংশোধনী বিল পেশ হয়। কোটা বিল নিয়ে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে তুমুল বিতর্ক হয়। বিজেপি নেতা প্রভাত ঝাঁ বলেন, সরকার ইস্তেহারে দেওয়া

চাকরি কোথায়, সংরক্ষণ দিয়ে কী হবে? উত্তাল রাজ্যসভা

তিয়াষা গুপ্ত:  বর্ধিত রাজ্যসভার অধিবেশনে কোটা বিল ও তিন তালাক বিল পাশ করাতে এদিন মরিয়া হয়ে ওঠে সরকার। এই নিয়ে দিনভর সংসদের উচ্চকক্ষে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়। এদিন রাজ্যসভায় কোটা বিল ও নাগরিক সংশোধনী বিল পেশ হয়। কোটা বিল নিয়ে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে তুমুল বিতর্ক হয়।

বিজেপি নেতা প্রভাত ঝাঁ বলেন, সরকার ইস্তেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করছে। এর উত্তরে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, এটা সরকারের ৪ বছরের কাজের সুযোগ তৈরি করতে না পারার অপরাধ ঢাকার চেষ্টা। তরুণ প্রজন্ম জানতে চায়, চাকরি কোথায়? ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি কোথায় গেল** এভাবেই আক্রমণ শানালেন তৃণমূল সাংসদ। এরপরে তিনি আরো বলেন, সরকারের সমস্যা হল প্রতিশ্রুতি দেয়, পূরণ করে না। স্টার্ট আফ ইন্ডিয়া, ডিজিটাল ইন্ডিয়ার পরে সরকারের নতুন প্রকল্প হল চিট ইন্ডিয়া।

এআইএডিএমকে এই বিলের বিরোধিতায় ওয়াক আউট করে। তাদের বক্তব্য, এই বিল আইন হলে তাদের রাজ্যের মানুষের কোনো উপকার হবে না।

এরপর কোটা নিয়ে আসরে নামেন রাজ্যসভায় কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা। তিনি বলেন, সরকার ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। শুধু ২০১৮ সালেই ১ কোটি চাকরি হারিয়েছেন। পিআইবি ডেটা উল্লেখ করে তিনি তথ্য পরিসংখ্যান নিয়ে বলেন, পাবলিক সেক্টর ইউনিটে ২০১৬-১৭ সালে চাকরি ১১.৮৫ লাখ থেকে কমে ১১.৩১ লাখ হয়েছে। ২০১৭ সালে ৫৪০০০ চাকরি হারিয়েছেন। ২০১৮ সালে ৪৩০০০ চাকরি হারিয়েছেন। সুতরাং আপনি ৯৫ হাজার চাকরি তৈরি করলেন আর চাকরি খোয়ালেন ৯৭ হাজার মানুষ। তিনি আরো বলেন, সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণে আরো ৮০০ বছর লাগবে বলে মনে করছেন দেশের অর্থনীতিবিদরা।

এদিকে এদিনই রাজ্যসভায় পেশ হয় নাগরিক সংশোধনী বিল। এই নিয়ে অসমে অশান্তি তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, এই বিল শুধু অসমের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়। আমরা উত্তর পূর্বের সংস্কৃতি ও পরিচিতি সংরক্ষণের চেষ্টা করছি। তিনি জানান, উত্তর পূর্বের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।

রাজ্যসভায় বর্ধিত অধিবেশন নিয়েও বিরোধীরা আপত্তি তোলে। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিল ঝুলে থাকলে সরকার অধিবেশন এগোতেই পারে। একইসঙ্গে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বিজয় গোয়েল বলেন, দেশবাসী চান, সংসদে কাজ হোক। তিনি বিরোধীদের সভার কাজে সহযোগিতা করার অনুরোধ করেন।

এরপর ৩১ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে বাজেট অধিবেশন। ফলে সরকারের হাতে আর বেশি সময় নেই। এরপর লোকসভা ভেঙে দিয়ে ভোটে যেতে হবে। তাই সরকার চাইছে, সংরক্ষণ যততাড়ি সম্ভব কার্যকর করতে। সেই কারণে গতকালই এই নিয়ে লোকসভায় বিল পেশ ও পাশ করানো হয়।

এদিকে এবারো ঝুলে রইল পরিবর্তিত তিন তালাক বিল। লোকসভায় সংখ্যার জোরে সরকার এই বিল পাশ করিয়ে নিয়েছে। কিন্তু উচ্চকক্ষে তা পাশ করানো সম্ভব হল না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *