রাজধানীর ত্রিমুখী লড়াইয়ে দিল্লির মসনদে কে? জল মাপছে জনতা!

জেএনইউতে উত্তেজনার মধ্যে দিল্লির বিধানকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হল৷  ৮ ফেব্রুয়ারি এক দফাতেই  দিল্লির ৭০টি কেন্দ্রে নির্বাচন হবে৷ ফল ঘোষণা হবে ১১ ফেব্রুয়ারি৷ দিল্লিতে কংগ্রেস যে আপের সঙ্গে লড়াই করবে না, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল৷ ২০২০ সালের দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস, বিজেপি, আপ পৃথকভাবে লড়াই করতে চলেছে৷ নির্বাচন কমিশনের রেকর্ড অনুযায়ী দিল্লিতে ১.৪৩ কোটি ভোটার রয়েছে৷

নয়াদিল্লি: জেএনইউতে উত্তেজনার মধ্যে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হল৷  ৮ ফেব্রুয়ারি এক দফাতেই দিল্লির ৭০টি কেন্দ্রে নির্বাচন হবে৷ ফল ঘোষণা হবে ১১ ফেব্রুয়ারি৷ দিল্লিতে কংগ্রেস যে আপের সঙ্গে লড়াই করবে না, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল৷ ২০২০ সালের দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস, বিজেপি, আপ পৃথকভাবে লড়াই করতে চলেছে৷ নির্বাচন কমিশনের রেকর্ড অনুযায়ী দিল্লিতে ১.৪৩ কোটি ভোটার রয়েছে৷ কিন্তু, দেশজুড়ে চলা নাগরিক আইনের উত্তাপে দিল্লির মসনদে বসতে চলেছে কে? জল মাপছে জনতা!

চলতি বছরে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে পূর্বাঞ্চলী, পাঞ্জাবী এবং ইসলাম ধর্মালম্বীরা বিশেষ গুরুত্ব পাবে বলে বিশেষজ্ঞ মহল চলছে৷ দিল্লির পূর্বাঞ্চলী ভোটাররা মূলত উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে এসেছে৷ দিল্লির ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ভোটার পূর্বাঞ্চলীদের দখলে৷ প্রয়াত শীলা দিক্ষীত যখন ক্ষমতায় ছিলেন, পূর্বাঞ্চলীর সাধারণভাবে কংগ্রেসের সমর্থক ছিলেন৷ সেই সময় দিল্লিতে তাঁদের নেতা ছিলেন মহাবাল মিশ্রা৷ সেই সময় দিল্লিতে জাত ধর্মের ভিত্তিতে বিজেপি সমর্থক ছিলেন৷ সাধারণত দিল্লিতে উঁচু জাতের মানুষই বিজেপি সমর্থক ছিলেন৷

আন্না হাজারের সঙ্গে লড়াই করার পর অরবিন্দ কেজরিওয়াল যখন দল গঠন করে ক্ষমতায় এলেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হলেন, পূর্বাঞ্চলীদের সমর্থন কংগ্রেস থেকে আপের দিকে ঝুঁকলেন৷পর পর দুবার অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লিতে সরকার গঠন করেছেন৷ যদিও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের  প্রথম সরকারের মেয়াদ ছিল মাত্র ৪৯ দিন৷

দিল্লির ২৫টি কেন্দ্রে পূর্বাঞ্চলীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ৷ এরফলে বর্তমানে পূর্বাঞ্চলীরা যে দিকে ঝুঁকবেন, তাঁরা দিল্লির বিধানসভা আসনের দুই তৃতীয়াংশ ভোট পাবেন৷ এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, দিল্লির চলতি বিধানসভা নির্বাচনে পূর্বাঞ্চলীরা কতটা গুরুত্বপূর্ণ৷ দিল্লির আদর্শ নগর, বদরপুর, বাদলি, বুরারি, কুন্দালি, কারাওয়াল নগর, কিরারি, লক্ষী নগর, মুস্তাফাবাদ, প্রতাপগঞ্জ, পালম. রিথালা, ত্রিলোতপুরী, সঙ্গম বিহার, উত্তম নগর এবং বিকাশপুরী কেন্দ্রে কারা জয়ী হবে, তা ঠিক করবে এই পূর্বাঞ্চলীয়রাই৷

দিল্লিতে মোট ভোটারের ২০ শতাংশ পঞ্জাবিরা রয়েছেন৷  তাঁদের ওপর নির্ভর করছে  ২৮ থেকে ৩০টি আসন৷ তাহলে বোঝাই যাচ্ছে পূর্বাঞ্চলীয়দের পাশাপাশি পঞ্জাবীদের ওপর দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল অনেকটা নির্ভর করছে৷ ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী দিল্লিতে ১২ থেকে ১৩ শতাংশ মুসলিম রয়েছে৷ দিল্লির মুসলিম ভোটারদের মতামত দিল্লির বিধানসভা কেন্দ্রের ১০টা আসনে প্রভাব ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷

দিল্লির পাঁচটা বিধানসভা কেন্দ্রে ৪০ শতাংশের বেশি মুসলিম ভোটার রয়েছেন৷ ওই পাঁচটি কেন্দ্র হল মুস্তাফাবাদ, বাদারপুর, সীমাপুরী, সহদরা৷ এছাড়া দিল্লির পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্র চাঁদনীচক, মাতিয়া মহল, বাল্লিমারান, ওখলা ও সিলামপুরে সিএএ বিরোধী এবং এনআরসি বিরোধী ব্যাপক আন্দোলন গড়ে উঠেছে৷

দিল্লির শিখ সম্প্রদায়কে বিজেপি নিজেদের পক্ষে নিতে চেয়েছিল৷ কিন্তু ২০১৩ সালে আপ আসার পর থেকে বিজেপি থেকে মুখ ঘুরিয়ে আপের দিকে ঝুঁকেছেন৷  কিন্তু যে কোনও সম্প্রদায়ের উচ্চ জাতের নাগিরকদের বিজেপির প্রতি দূর্বলতা রয়েছে৷ দিল্লির প্রায় ৪০ শতাংশ নাগরিক রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে৷  পূর্বাঞ্চলীয়দের সমর্থন টানার চেষ্টা করছে৷ দিল্লিতে অভিনেতা তথা রাজনীতিবিদ মনোজ তিওয়ারিকে বিজেপির মুখ করা হয়েছে৷ মনোজ তিওয়ারি  পূর্বাঞ্চলীয়৷ এছাড়ারও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ পুরি ও প্রভাশ বর্মা দিল্লি বিজেপিতে যথেষ্ট সক্রিয়৷

অন্যদিকে, আপ দিল্লির মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন৷  এছাড়া পূ্র্বাঞ্চলীয় ও মুসলিমদের সমর্থন নিজেদের দিকে টানার যথেষ্ট চেষ্টা করছেন৷ তৃতীয়বারের জন্য আপ আবার সরকার গঠন করবে বলেই তারা মনে করছে৷ পাশাপাশি জয়ের বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী৷  দিল্লির সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বিজেপি বিরোধী ভোটগুলো পাবে বলে মনে করছে কংগ্রেস৷ কেজরিওয়ালের জয়ের ধারা থামাতেও যথেষ্ট আশাবাদী বিজেপি৷ এখন দেখায় বিষয় রাজধানীর বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের হাসি কে হাসবে৷ এর উত্তর ১১ ফেব্রুয়ারি পাওয়া যাবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *