ওড়িশা পারলে বাংলায় না কেন? পাশ-ফেল ইস্যুতে তপ্ত শিক্ষামহল

আজ বিকেল: পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাশ-ফেল ফিরিয়ে আনতে সংসদে পাশ হয়েছে নয়া বিল৷ লোকসভার পর রাজ্যসভায়ও বিল অনুমোদন পেয়েছে৷ রাজ্য সরকারের ঘাড়ে পাশ-ফেলের সিদ্ধান্ত চাপিয়েও দিয়েছে কেন্দ্র৷ কিন্তু, রাজ্যের এই আদৌও ফিরিয়ে আনা সম্ভব কি না, তা নিয়েই শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক৷ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির তরফে পাশ-ফেল ফিরিয়ে আনার দাবি জানালেও বেকে

ওড়িশা পারলে বাংলায় না কেন? পাশ-ফেল ইস্যুতে তপ্ত শিক্ষামহল

আজ বিকেল: পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাশ-ফেল ফিরিয়ে আনতে সংসদে পাশ হয়েছে নয়া বিল৷ লোকসভার পর রাজ্যসভায়ও বিল অনুমোদন পেয়েছে৷ রাজ্য সরকারের ঘাড়ে পাশ-ফেলের সিদ্ধান্ত চাপিয়েও দিয়েছে কেন্দ্র৷ কিন্তু, রাজ্যের এই আদৌও ফিরিয়ে আনা সম্ভব কি না, তা নিয়েই শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক৷ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির তরফে পাশ-ফেল ফিরিয়ে আনার দাবি জানালেও বেকে বসেছে নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি৷ কিন্তু, কেন এত জটিলতা?

ওড়িশা পারলে বাংলায় না কেন? পাশ-ফেল ইস্যুতে তপ্ত শিক্ষামহলঅন্যদিকে পাশ-ফেল ফিরলে ABTA পথে নেমে বিরোধিতা করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে৷ সগঠনের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাজ্যে পাশ-ফেল ফিরুক, তা কোনও ভাবেই মেনে নেমেন না তারা৷ ABTA-এর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এবার সরব হয়েছেন STEA-এর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার৷ তিনি বলেন, ‘‘এই সংগঠনের বন্ধু সরকারের আমলে, ইংরেজি ও পাশ-ফেল তুলে দেওয়ার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুরো শেষ করে দিয়েছে৷ ফলে এঁদের কাছ থেকে আর কী আশা করা যায়? শিক্ষা ও শিক্ষকদের এত সমস্যা নিয়ে নিয়ে তাঁদের কোন মাথা ব্যথা নেই। পাশ-ফেলের বিরোধিতা করা তাঁদের প্রধান কাজ। এদিকে বর্তমান রাজ্য সরকার মুখে বলছে তাঁরা পাশ-ফেল ফিরিয়ে আনতে চান, অথচ বছরের পর বছর টালবাহানা করে যাচ্ছে। আসলে সাধারণ পরিবারের সন্তানদের প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করার প্রশ্নে সব শাসকের ভূমিকা একই সে পূর্বতন হোক আর বর্তমানই হোক৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তবে আজ সারা দেশের ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক সমাজ প্রথম শ্রেণি থেকে পাশ-ফেল ফেরানোর আন্দোলনে সামিল হয়েছে। ফলে শুধু পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণি নয় প্রথম শ্রেণি থেকে পাশ-ফেল ফিরবেই৷’’

STEA-এর সহ সাধারণ সম্পাদক তপন জানা বলেন, ‘‘প্রথম শ্রেণি থেকে পাশ ফেল তুলে দেওয়ায় শিক্ষার পরিণতি কী হয়েছে তা সবার জানা হয়ে গিয়েছে। শুধু উলঙ্গ রাজার দেশে চাটুকাররাই রাজার কাপড় দেখতে পাচ্ছে। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক নিয়ে কুটকাচালির অন্ত নেই। অথচ সবাই জানে বামফ্রন্ট যখন পাশ-ফেল তুলেছিল তখন কেন্দ্র পাশ-ফেল তোলেনি৷ তাহলে আজ কেন্দ্রের দোহাই কেন। যদি সত্যিই চাও তবে আপনি আঁচড়ি ধর্ম শেখাও অপরে৷’’

মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, ‘‘আমরা সমিতির পক্ষ থেকে ১৯৮০ সাল থেকে ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক এবং সার্বিকভাবে এ রাজ্যে অতীতের ধারা বেয়ে শিক্ষার পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে ধারাবাহিক আন্দোলন পরিচালনা করে আসছি। প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল ব্যবস্থা চালু রাখার দাবি সরকারের কাছে জানিয়ে এসেছি। পূর্বতন সরকারের যুক্তি মেনে বর্তমান রাজ্য সরকার ও স্কুল ছুটের সংখ্যা বৃদ্ধির অজুহাতে সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে এই প্রথা চালু করছেন না৷ অথচ সকলে জানেন এই শিক্ষা নীতির ফলে বেসরকারিভাবে শিক্ষা নিয়ে রমরমিয়ে ব্যবসা চলছে। সরকারি বিদ্যালয়গুলি উপযুক্ত শিক্ষা ও শিক্ষা কর্মীর অভাব ও প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকছে৷ চূড়ান্ত বেকারত্ব ও দারিদ্র্য যে স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়াচ্ছে তা অতিবাস্তব৷ এই শিক্ষা নীতির ফলে পশ্চিমবঙ্গে পরিষ্কারভাবে দুই শ্রেণির নাগরিক সৃষ্টি হচ্ছে৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির পক্ষ থেকে এই বছরেই প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ ফেল চালুর দাবি জানাচ্ছি। ওড়িশা সরকার যদি পারে, আমাদের রাজ্য সরকার পারবে না কেন?’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *