বনধের ভোঁতা অস্ত্রে কাজ হবে? দেখুন

তিয়াষা গুপ্ত: সামনেই লোকসভা নির্বাচন। এই রাজ্যে তো বটেই, সারা দেশে বামেরা এখন ক্ষয়িষ্ণু শক্তি। একের পর রাজ্যে ক্ষমতা হারিয়েছে তারা। এই অবস্থায় পুরনো আন্দোলনের রাস্তায় ফিরতে চাইছে তারা? প্রশ্ন হল তারা কি আবার বনধ, ধর্মঘট, আইন অমান্য-এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি হাতিয়ার করতে চাইছে? বনধ গণতন্ত্রে প্রতিবাদের একটা মজবুত হাতিয়ার। কিন্তু বারবার ব্যবহারে তা ভোঁতা হয়ে

বনধের ভোঁতা অস্ত্রে কাজ হবে? দেখুন

তিয়াষা গুপ্ত: সামনেই লোকসভা নির্বাচন। এই রাজ্যে তো বটেই, সারা দেশে বামেরা এখন ক্ষয়িষ্ণু শক্তি। একের পর রাজ্যে ক্ষমতা হারিয়েছে তারা। এই অবস্থায় পুরনো আন্দোলনের রাস্তায় ফিরতে চাইছে তারা? প্রশ্ন হল তারা কি আবার বনধ, ধর্মঘট, আইন অমান্য-এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি হাতিয়ার করতে চাইছে? বনধ গণতন্ত্রে প্রতিবাদের একটা মজবুত হাতিয়ার। কিন্তু বারবার ব্যবহারে তা ভোঁতা হয়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গে যেমনটা হয়েছে।

শ্রমিক আন্দোলনকে জোরদার করতে পথে নামছে বাম শ্রমিক সংগঠনগুলি। আগামী ৮ ও ৯ জানুয়ারি দেশজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে তারা। পরের মাসের ১৩ তারিখে রয়েছে ব্রিগেড। এভাবেই আন্দোলনকে হাতিয়ার করে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে তারা।
প্রশ্ন হল হরতাল, ধর্মঘট, বনধ, আইন অমান্য- এসব করে এখন কী মানুষের মন জয় করতে পারবে বামেরা? রাজনীতিতে কী এভাবে ফিরতে পারবে তারা? কারণ সময় বদলেছে। এখন মানুষ আর ধর্মঘট করে দিবানিদ্রায় বিশ্বাস করে না। কর্মনাশা বনধ কীভাবে জনজীবনের সর্বনাশ করে, তা মানুষ প্রত্যক্ষ করেছেন। অতীতে এই রাজ্যের বুকে কৃষক স্বার্থে, শ্রমিক স্বার্থে আন্দোলন বামেদের জমি মজবুত করতে সাহায্য করেছে। মেহনতি মানুষের স্বার্থে আওয়াজ তুলেছে তারা। এবারও সেই পথেই হাঁটতে চলেছে তারা। শ্রমজীবী মানুষের সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে চাইছে।

শ্রমজীবী মানুষের ন্যূনতম মাসিক ছয় হাজার টাকা পেনশন, শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, সমকাজে সমবেতনের দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন জোরদার করা হবে। রাজ্যজুড়ে চলবে নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি। শ্রমিক স্বার্থে আন্দোলন অবান্তর নয়, প্রশ্ন হল বনধ কি এই মুহূর্তে উপযুক্ত কোনো হাতিয়ার?

শুধু বাম শ্রমিক সংগঠন নয়, ময়দানে নামছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠনও। লোকসভা নির্বাচনের আগে জাতীয় স্তরে বাম ঐক্য তুলে ধরতে একাধিক কর্মসূচি নিয়েছে সিপিএম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। পরের মাসের ১৮ ও ১৯ তারিখ দিল্লিতে মিছিল ও আইন অমান্য করবেন এসএফআই সদস্যরা।

বাম আমলে বহু সর্বাত্মক বনধ দেখেছ রাজ্য। বিরোধী দলে থাকার সময় একাধিক বনধ ডেকেছ তৃণমূলও। সরকারে আসার পর একটাও ধর্মঘট ডাকেনি তৃণমূল। বরং বিভিন্ন সময় বনধ ব্যর্থ করতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসন। কারণ একটা কর্মনাশা বনধের ফলে শ্রমিক খেটে খাওয়া মানুষের দিনের রোজগার মুখ থুবড়ে পড়ে। যাঁদের অফিসে না গেলেই নয়, তাঁদের ধর্মঘটীদের দাপটে নাজেহাল হতে হয়েছে বিভিন্ন সময়ে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বলেছেন, মানুষকে সমস্যায় ফেলে কিছু করা যাবে না। তাঁর কাছে এসেছে ধর্মঘট সমর্থনের প্রস্তাব। তবে কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তাঁর সমর্থন চেয়েছে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন সিটু। ধর্মঘট সমর্থন করতে মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটুর রাজ্য সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায়। মমতা কি করেন, এখন সেটাই দেখার। যতদূর জানা গেছে, বনধ রুখতে কড়া অবস্থান নেবে লালবাজার। কারণ মানুষের জনজীবন সচল রাখার প্রশ্ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 17 =