ভোট-কর্মীদের নিরাপত্তা ইস্যুতে জোরালো পদক্ষেপ শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের

আজ বিকেল: লোকসভা নির্বাচনে ভোট-কর্মী হিসাবে যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসকের নিকট ডেপুটেশন দিল শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চ। ঐক্যমঞ্চের তরফে ১১জনের এক প্রতিনিধিদল জেলাশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন৷ তুলে ধরেন নিজেদের দাবি৷ এদিনের এই ডেপুটেশন গ্রহণ করেন এডিএম (ডেভেলপমেন্ট) প্রতিমা দাস। তিনি বলেন, ‘‘নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই দেখা হবে। স্পর্শকাতর বুথগুলিতে বিশেষ ব্যবস্থা

ভোট-কর্মীদের নিরাপত্তা ইস্যুতে জোরালো পদক্ষেপ শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের

আজ বিকেল: লোকসভা নির্বাচনে ভোট-কর্মী হিসাবে যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসকের নিকট ডেপুটেশন দিল শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চ। ঐক্যমঞ্চের তরফে ১১জনের এক প্রতিনিধিদল জেলাশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন৷ তুলে ধরেন নিজেদের দাবি৷

এদিনের এই ডেপুটেশন গ্রহণ করেন এডিএম (ডেভেলপমেন্ট) প্রতিমা দাস। তিনি বলেন, ‘‘নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই দেখা হবে। স্পর্শকাতর বুথগুলিতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’ তবে, আগামী লোকসভা ভোটে ভোট-কর্মীদের নিরাপত্তা বিষয়ে আরও কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি৷ ঐক্যমঞ্চের তরফ থেকে উপস্থিত প্রতিনিধিরা সাফ জানিয়ে দেন, আগামী লোকসভা নির্বাচনে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা না হলে গোটা বাংলাজুড়ে ভোট কর্মীরা ভোট গ্রহণের দায়িত্ব বয়কট করবেন৷

ভোট-কর্মীদের নিরাপত্তা ইস্যুতে জোরালো পদক্ষেপ শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চেরগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জের রহতপুর হাইমাদ্রাসার তরুণ শিক্ষক রাজকুমার রায়ের রহস্যজনক নিখোঁজ ও পরবর্তীতে তাঁর ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন দেহ উদ্ধারের ঘটনা আজও শিহরিত সরকারি কর্মীদের একাংশ। শুধু রাজকুমার নয়, অসংখ্য বুথে ভোটকর্মীদের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলে। বহু জায়গায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবে প্রাণ রক্ষার তাগিদে ভোটকর্মীরা অন্যায় ও অনৈতিক আচরণের কাছে মাথা নোয়াতে বাধ্য হয়। স্বাভাবিকভাবেই আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে সবার মনে আতঙ্ক ও ক্ষোভের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতাকে স্মরণ করে শিক্ষক সমাজ আজ ভোটকর্মী হিসাবে দায়িত্ব পালন করার ক্ষেত্রে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন। দাবি উঠেছে ভোট কর্মী ও ভোটারদের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী সহ যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে।

শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের রাজ্য কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘‘অবিলম্বে নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত পদক্ষেপ গ্রহণ ও প্রতিশ্রুতি না দিলে আগামী লোকসভা নির্বাচনে ভোট প্রক্রিয়া পরিচালনা করার ক্ষেত্রে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে। কোন দল জিতবে বা কোন দল পরাজিত হবে তা দেখবার দায়িত্ব ভোটকর্মীর নয়৷ মানুষ যেন তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে বাধা না পান তা সুনিশ্চিত করতে হবে৷ আমরা ভোটকর্মী হিসাবে জীবনের নিরাপত্তা, মান-মর্যাদা এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অক্ষুণ্ণ রেখে নির্বাচন পরিচালনার দাবি জানাচ্ছি৷’’

ভোট-কর্মীদের নিরাপত্তা ইস্যুতে জোরালো পদক্ষেপ শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চেরএদিন ঠিক কোন কোন দাবি তুলে ধরা হয় জেলাশাসকের কাছে? সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে,

১) আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য বুথ পিছু প্রিজাইডিং অফিসারের সহিত ৬ জন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী সহ অন্যান্য বাহিনী দিয়ে ভোটার এবং ভোট কর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।

২) স্পর্শকাতর বুথগুলিতে দ্বিগুণ হারে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৩) ভোট গ্রহণের শেষে ভোট বাক্স জমা দেওয়ার পর রিলিজ অর্ডার দিয়ে দিলেই নির্বাচন কমিশনের সমস্ত দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। ভোট গ্রহণের জন্য ভোট কর্মীদের বাড়ি থেকে বাহির হওয়ার পর থেকে বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত তাঁর জীবনের সমস্ত নিরাপত্তার ভার নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে।

৪) ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে ভোট কর্মীদের যথাযথ নিরাপত্তাসহ থাকা, খাওয়া এবং শৌচালয়ের যথেষ্ট ব্যবস্থা রেখে ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করতে হবে।

৫) প্রিজাইডিং অফিসারের অভিযোগের ভিত্তিতে সেক্টর অফিসার বা রিটার্নিং অফিসার যথাযথ ভূমিকা পালন না করে প্রিজাইডিং অফিসারকে অনৈতিক কাজে বাধ্য বা প্ররোচিত করলে নির্বাচন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং নির্বাচন কমিশনকে তৎক্ষণাৎ উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৬) শুধু মৌখিক আশ্বাস নয়, একজন ভোটকর্মী বাড়ি থেকে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছানো এবং ভোটিং মেটেরিয়ালস জমা দেওয়ার পর বাড়ি ফেরার জন্য উপযুক্ত যানবাহন যথেষ্ট পরিমাণে রাখতে হবে।

৭) ভোটকর্মীদের হতাহতের ঘটনায় তৎক্ষণাৎ উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। যে কোন ভোটকর্মী অসুস্থ বা আহত হলে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ সহ চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন কে নিতে হবে।

৯) প্রতিবন্ধীদের ভোট কর্মী হিসাবে নিয়োগ করে তাঁদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে৷

এদিনের এই ডেপুটেশনের জন্য প্রতিনিধি দলে ছিলেন রাজ্য কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কিংকর অধিকারী, সম্পাদক মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য প্রতাপ পন্ডা, অক্ষয় খান, অধ্যাপক শুকদেব দাস, টুলটুল চৌধুরী, কমলেশ মান্না, বাণীকুমার বল, তপন দাস, পরেশ দত্ত, নিমাই চাঁদ রানা গৌতম গড়াই প্রমূখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *