গাইতে গাইতে দর দর করে ঘামছিলেন, আলোগুলো নিভিয়ে দাও, বলেছিলেন কেকে

গাইতে গাইতে দর দর করে ঘামছিলেন, আলোগুলো নিভিয়ে দাও, বলেছিলেন কেকে

কলকাতা: গাইতে গাইতেই সকলকে চিরবিদায় জানিয়ে পরলোকে পাড়ি দিলেন বলিউডের তারকা গায়ক কৃষ্ণকুমার কুনাথ ওরফে কেকে। বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৪ বছর। মঙ্গলবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে ছিল কেকে লাইভ। অনুষ্ঠান সেরে হোটেলে ফিরতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ হোটেলে তিনি পড়েও যান বলে খবর। তড়িঘড়ি তাঁকে একবালপুরের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা শিল্পীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন- নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠানের পরই মৃত্যু গায়ক কেকে’র

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নজরুল মঞ্চ ছিল ভিড়ে ঠাসা৷ তার উপর মঞ্চ জুড়ে আলোর ঝলকানি৷ একের পর এক গান গেয়ে চলেছেন কেকে৷ কিন্তু, গানের মাঝে মাঝেই বারবার রুমাল দিয়ে মুখ-কপালের ঘাম মুছছিলেন শিল্পী৷ মাঝে মধ্যে মাথাতেও বোলাচ্ছিলেন ওই রুমাল৷ বারবার মঞ্চের পিছনে গিয়ে ছোট বোতলে রাখা জল ঢালছিলেন গলায়৷ তবে কি গান গাইতে গাইতেই অসুস্থ বোধ করছিলেন কেকে? কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়েই পারফর্ম করে যান? মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে কেকে-র লাইভ অনুষ্ঠানের একাধিক ভিডিয়োতে ধরা পড়েছে সেই ছবি৷ মঞ্চে উপস্থিত অনেকেই বলেছেন, গান গাইতে গাইতে দরদর করে ঘামছিলেন কেকে৷

যদিও অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই কেকে ছিলেন চনমনে৷ মঞ্চের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত দাপিয়ে বেড়িয়েছেন৷ তারই মাঝে বারবার চলে যাচ্ছিলেন মঞ্চের পিছনে৷ ঘাম মুছে নিয়ে জল খাচ্ছিলেন৷ একটি ভিডিয়োতে দেখা যায়, কেকে মুখ মুছে মাথার চুলে আঙুল চালিয়ে ফের মাইক হাতে গান গাইতে যাচ্ছেন৷ সেই সময় মঞ্চের পাশ থেকে একজন হিন্দিতে বলে ওঠেন প্রচণ্ড গরম৷ কেকে তাঁর দিকে তাকিয়ে ইশারায় সম্মতি জানান৷ এর পরেই মঞ্চের উপরের আলোগুলো নিভিয়ে দিতে বলেন শিল্পী৷ তার পর ফের গান৷ তাঁর সুরেলা কন্ঠের জাদুতে তখন বুঁদ দর্শককুল৷

কেকে-র আচমকা মৃত্যুতে প্রশ্ন উঠেছে প্রেক্ষাগৃহের ভিড় নিয়ে৷ লাইভ দেখতে আসা গুরু নানক ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রের কথায়, ‘‘প্রচুর ভিড় হয়েছিল। বাইরেও বহু মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন। একটা সময় দরজা খুলে দেওয়া হয়। ভীষণ গরম লাগছিল, মনে হচ্ছিল এসি কাজ করছে না।’’  

কেকে-র আগে এদিন মঞ্চে উঠেছিলেন শুভলক্ষ্মী দে৷ গ্রিনরুমে কেকে-র সঙ্গে দেখা করেন তিনি৷ ভালো করেই তাঁর সঙ্গে কথা বলেন শিল্পী৷ সেই সময় কৃষ্ণকুমারকে দেখে একবারও মনে হয়নি তিনি অসুস্থ৷ শুভলক্ষ্মী জানান, এত ভিড় হয়েছিল যে অনুষ্ঠানে এসে গাড়িতেই কিছু ক্ষণ বসে থাকতে হয় কেকে-কে৷ ভিড়ের জন্য ভিতরে ঢুকতে পারছিলেন না। পরে কোনও ভাবে তাঁকে এনে গ্রিনরুমে বসানো হয়। এর পরেই তাঁর সঙ্গে গ্রিনরুমে গিয়ে কথা বলেন শুভলক্ষ্মী। তিনি বলেন, ‘‘অনুষ্ঠানের সময় ভীষণই এনার্জেটিক লাগছিল ওঁকে। ভাবতেই পারিনি এমনটা হবে!’’