নিভেছে ‘সন্ধ্যা’ প্রদীপ, গীতশ্রীর শেষ যাত্রায় পা মেলালেন মমতা

নিভেছে ‘সন্ধ্যা’ প্রদীপ, গীতশ্রীর শেষ যাত্রায় পা মেলালেন মমতা

কলকাতা: তারাদের দেশে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়৷ নেই সন্ধ্যা, থেকে গেল ‘এ শুধু গানের দিন’৷ ‘আরও কিছুক্ষণ না হয় রহিতে কাছে’৷ গীতশ্রীর শেষযাত্রায় রাজপথে আজ মানুষের ঢল৷ অগণিত গুণমুগ্ধের ভিড়৷ শেষযাত্রায় পা মেলালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ 

আরও পড়ুন- কেন এত সোনা পরতেন বাপ্পি? কেই বা ছিল অনুপ্রেরণা

বিকেল পাঁচটায় রবীন্দ্র সদন থেকে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের পার্থিব শরীর নিয়ে কেওড়াতলা মহাশ্মশানের উদ্দেশে রওনা দেয় শববাহী গাড়ি৷ প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে চলেছে শোক মিছিল৷ 

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর উত্তরবঙ্গ সফর কাটছাঁট করে আজই ফিরে এসেছেন কলকাতায়৷ রবীন্দ্র সদন থেকে কেওড়াতলা মহাশ্মশান পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যাবেন তিনি৷ পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ কৃত্য সম্পন্ন হবে গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের৷ দেওয়া হবে গান স্যালুট৷ ‘গীতশ্রী’ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়-এর মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই কলকাতায় প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে নিজের সফরসূচির বদল করেন মমতা। জানিয়ে দেন, বুধবার সরকারি তত্ত্বাবধানেই হবে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য।

আজ সকালে পিস ওয়াল্ড থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় রাজ্য সঙ্গীত আকাদেমিতে৷ সেখানে থেকে  রবীন্দ্রসদনে পৌঁছয় গীতশ্রীর পার্থিব শরীর। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সেখানেই শায়িত রাখা ছিল তাঁর মরদেহ৷ তিনি চলে গেলেন, থেকে গেল তাঁর সুর৷ 

১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর কলকাতার ঢাকুরিয়ায় জন্ম সন্ধ্যার৷ তাঁর বাবা নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন রেলের কর্মকর্তা৷ মায়ের নাম হেমপ্রভা দেবী৷ ছয় ভাইবোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ তিনি৷ পণ্ডিত সন্তোষ কুমার বসু, অধ্যাপক এটি ক্যানন এবং অধ্যাপক চিন্ময় লাহিড়ীর কাছে সঙ্গীত শিক্ষা লাভ করেন গীতশ্রী। তবে তাঁর গুরু ছিলেন উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি খান৷ তাঁর পুত্র উস্তাদ মুনাওয়ার আলি খানের ছত্রছায়ায় ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিখেছিলেন তিনি৷ শাস্ত্রীয় সঙ্গীত থেকে আধুনিক বাংলা গানের জগতে তাঁর সুরের বিস্তার৷ তাঁর কন্ঠে প্রাণ পেয়েছে অগণিত গান৷ তাঁর ঝুলিতে রয়েছে জাতীয় পুরস্কার৷ ১৯৭১ সালে ‘জয় জয়ন্তী’ এবং ‘নিশিপদ্ম’ ছবির জন্য এই পুরস্কার পান সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়৷ ২০১১ সালে তাঁকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ উপাধিতে সম্মানিত করে রাজ্য সরকার৷ প্রায় গোটা জীবন সঙ্গীতের জগতে অতিবাহিত করেছেন তিনি৷ চলে যাওয়ার আগে ফিরিয়েছিলেন পদ্ম সম্মান৷