ফেরা হল না ছেলেবেলার শহরে, সমরেশ-প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাবুপাড়া, শোক প্রকাশ মোদী-মমতার

ফেরা হল না ছেলেবেলার শহরে, সমরেশ-প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাবুপাড়া, শোক প্রকাশ মোদী-মমতার

 কলকাতা: চিরঘুমের দেশে ‘কালবেলা’র স্রষ্টা৷  সোমবার বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। সন্ধ্যা পৌনে ৬টা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। গোয়েন্দা চরিত্র অর্জুনের স্রষ্টার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৫ এপ্রিল মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় লেখকের৷ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারজয়ী সাহিত্যিককে। তবে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা বাড়তে থাকে তাঁর। যদিও আগে থেকেই সিওপিডি-র সমস্যায় ভুগছিলেন সমরেশ। 

১৯৪৪ সালে উত্তরবঙ্গের গয়েরকাটায় জন্ম সাহিত্যিকের৷ তাঁর অসামান্য সৃষ্টির মধ্যে রয়েছে উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষের মতো বেশ কয়েকটি কালজয়ী উপন্যাস৷ সাহিত্যিকের প্রাথমিক শিক্ষা জলপাইগুড়ি জিলা স্কুলে। ষাটের দশকের গোড়ায় তিনি পাড়ি দেন কলকাতায়৷ ভর্তি হন স্কটিশ চার্চ কলেজের বাংলা বিভাগের (সাম্মানিক) স্নাতক স্তরে। এর পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

শেষ বয়সে আরও একবার সবুজ শহরে ফেরার ইচ্ছে ছিল তাঁর। ২৮ বছর আগে ‘কালবেলা’র লেখকের সেই ইচ্ছের কথা আজও মনে রয়েছে জলপাইগুড়ির বাবুপাড়া পাঠাগারের সহ-সম্পাদক, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তপন ঘোষের। ১৯৯৫ সালে বাবুপাড়া পাঠাগারের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে নিজের শহরে পা দিয়েছিলেন অনিমেষ-মাধবীলতার  স্রষ্টা৷  তাঁর প্রয়াণে মঙ্গলবার বন্ধ রাখা হল বাবুপাড়া পাঠাগার। এদিকে সাহিত্যিকের প্রয়াণের খবরে তাঁর ছেলেবেলার স্কুলের প্রধান শিক্ষক ধর্মচাঁদ বাড়ুই জানান, গ্রীষ্মের ছুটির মধ্যেই সাহিত্যিকের জন্য একটি স্মরণসভা করার ইচ্ছে রয়েছে। তাতে সমরেশ মজুমদারের সহপাঠীদেরও আমন্ত্রণ জানানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে৷ 

কালবেলা উপন্যাসের জন্য ১৯৮৪ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন সমরেশ মজুমদার। তারও আগে ১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কারের সম্মানিত হয়েছিলেন সাহিত্যিক। ‘কলকাতায় নবকুমার’-এর জন্য ২০০৯ সালে বঙ্কিম পুরস্কার পান তিনি৷ 

সাহিত্যিকের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাংলায় শোকবার্তায় মোদী লেখেন, ‘‘শ্রী সমরেশ মজুমদার বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদানের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন । তাঁর লেখনীতে পশ্চিমবঙ্গের সমাজ ও সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। তাঁর পরিবারের প্রতি রইল আমার সমবেদনা। ওঁ শান্তি ।’’